শিরোনাম :
জাতীয় স্মৃতিসৌধে নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতির শ্রদ্ধা নিবেদন ভারতের মুখপাত্রের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান বাংলাদেশের নির্বাচনকে সামনে রেখে সাইবার নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার জামায়াত নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দিলো এলডিপি ও এনসিপি অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদেই হাদি হত্যার বিচার সম্পন্ন করা হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ফয়সাল ভারতে পালিয়ে গেছে, স্বীকার করলো পুলিশ- মেঘালয়ে দুই সহযোগী গ্রেফতার জানালো ডিএমপি প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন জুবায়ের রহমান চৌধুরী ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠকের আগে ইউক্রেনে ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল রাশিয়া আয়কর রিটার্ন জমার সময় আরও এক মাস বাড়ালো এনবিআর দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮.৮ ডিগ্রি- তীব্র শীতে কাঁপছে উত্তরের জেলাগুলো

ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠকের আগে ইউক্রেনে ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল রাশিয়া

  • আপলোড টাইম : ১২:৫২ পিএম, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ১৯ Time View
Photo: CNN

।।বিকে আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আগে ইউক্রেনজুড়ে ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।

শনিবার ২৭ ডিসেম্বর (স্থানীয় সময়) ভোর থেকে কিয়েভসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চালানো হয়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

এই হামলায় শত শত ড্রোন ও বহু ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয় বলে জানিয়েছেন জেলেনস্কি।

জেলেনস্কির ভাষ্য অনুযায়ী, এক রাতেই প্রায় ৫০০টি ড্রোন ও ৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। এতে রাজধানী কিয়েভের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ ও তাপ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কিয়েভ অঞ্চলে অন্তত একজন নিহত হয়েছে এবং রাজধানীতে দুই শিশুসহ অন্তত ১৯ জন আহত হয়েছে।

হামলার পর কিয়েভে প্রায় ১০ ঘণ্টা ধরে বিমান হামলার সতর্কতা জারি ছিল, যা স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ২০ মিনিটে তুলে নেওয়া হয়। ক্ষতিগ্রস্ত আবাসিক ভবনগুলোর ধ্বংসস্তূপে এখনও উদ্ধারকাজ চলছে।

জেলেনস্কি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় চলমান শান্তি প্রচেষ্টার জবাব হিসেবেই রাশিয়া এই হামলা চালিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, ক্রিসমাস ও নববর্ষের সময়কে যদি রাশিয়া ধ্বংস আর আগুনের মধ্যে ঠেলে দেয়, তাহলে এর জবাব দিতে হবে শক্ত ও কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে।

তিনি মস্কোর ওপর আরও চাপ বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের প্রতি আহ্বান জানান।

ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ সংস্থা জানায়, কিয়েভসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের জ্বালানি অবকাঠামোতে আঘাত হানায় জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করতে হয়েছে। এক বার্তায় ইউক্রেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ওলেক্সিয়ে কুলেবা জানিয়েছেন, রুশ বাহিনীর হামলায় কিয়েভের ৪০ শতাংশ আবাসিক ভবন বিদ্যুৎশূন্য হয়ে পড়েছে। কিয়েভ ঘিরে থাকা অঞ্চলে প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার পরিবার বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।

শীতকালে ইউক্রেনে তীব্র শীত পড়ে। কিয়েভের বর্তমান তাপমাত্রা বর্তমানে শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। এই অবস্থায় বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় রাজধানীর বাসিন্দারা ব্যাপক ভোগান্তিতে পরেছেন বলে জানিয়েছেন কুলেবা।

রাশিয়ার হামলার প্রভাব পড়েছে প্রতিবেশী দেশেও। ইউক্রেন সীমান্তঘেঁষা পোল্যান্ডের কয়েকটি বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয় এবং যুদ্ধবিমান আকাশে টহল দেয়।

এদিকে যুদ্ধ বন্ধে সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা চললেও ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ প্রশ্নটি এখনও সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে আছে।

ওয়াশিংটন পৌঁছানোর পর সংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে রাশিয়ার হামলা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে জেলেনস্কি বলেন, যুদ্ধ থামানোর জন্য ইউক্রেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার শান্তিপূর্ণ আলোচনার ব্যাপারে রাশিয়ার মনোভাব কী, তা এই হামলার মধ্যে দিয়ে আরও একবার প্রমাণিত হলো।

জেলেনস্কি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে প্রস্তাবিত ২০ দফা শান্তি কাঠামোর প্রায় ৯০ শতাংশ প্রস্তুত, তবে বিতর্কিত অঞ্চলগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এখনও ঐকমত্য হয়নি।

রাশিয়া দাবি করছে, ইউক্রেনকে ডোনেৎস্ক অঞ্চলের সম্পূর্ণ এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যদিকে কিয়েভ চায়, বর্তমান যুদ্ধরেখায় লড়াই বন্ধ হোক। জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়েও মতবিরোধ রয়ে গেছে।

জেলেনস্কি ইঙ্গিত দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউক্রেনের অবস্থান সমর্থন না করে, তাহলে তিনি শান্তি পরিকল্পনাটি গণভোটে তোলার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারেন—তবে সেক্ষেত্রে রাশিয়াকে অন্তত ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে হবে।

রাশিয়ার পক্ষ থেকে সরাসরি হামলা নিয়ে তাৎক্ষণিক কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে মস্কো জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবগুলো তারা পর্যালোচনা করছে এবং আলোচনায় একটি টার্নিং পয়েন্টে পৌঁছানো সম্ভব হতে পারে।
এই প্রেক্ষাপটে জেলেনস্কি ও ট্রাম্পের আসন্ন বৈঠককে যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সূত্র-রয়টার্স।

সোস্যাল মিডিয়াতে নিউজটি শেয়ার করুন

আরও পড়ুন
© All rights reserved © 2025. Bangalir Khobor
Developed by Tiger Infotech