।।বিকে রিপোর্ট।।
যারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নির্বাচন পর্যন্ত পৌঁছাতে দিতে চায় না, তারা যত রকমভাবে পারবে, বাধা দেবে। বাংলাদেশের সত্তাকে গড়ে তুলতে তারা বাধা দেবে। তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে নির্বাচন বানচাল করার। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে, যাতে নির্বাচন না হয়।
এগুলোর কিছু কিছু লক্ষণ এখন দেখা যাচ্ছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সামনে আরও আসবে। এ জন্য আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে- বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার ২ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সাতটি রাজনৈতিক দল ও হেফাজতে ইসলামের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে আলাপ কালে তিনি এ কথা বলেছেন।
এর আগে পূর্ব ঘোষিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নতুন করে সংলাপের অংশ হিসেবে ৭ দল ও এক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনায় বসেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
বিকেল সোয়া ৫টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সাত দল ও এক সংগঠনের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক শুরু হয়, চলে প্রায় দেড় ঘণ্টা। গত রোববার তিন দলের সঙ্গে বৈঠকের মত এদিনও আলোচনা ছিল মূলত নির্বাচনকেন্দ্রিক।
বৈঠক শেষে যমুনার সামনে ব্রিফিংয়ে এসে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, নির্বাচন ফেব্রুয়ারি, মানে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে তিনি পরামর্শ চেয়েছিলেন মিটিংয়ে। তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছেন, আনন্দ ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হবে। জীবনে কখনো ভোট দিতে পারেনি তাদের জন্য এই নির্বাচনে ভালো অভিজ্ঞতা দিতে হবে। যারা ভোট দিতে গিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন, পূর্বে তাদেরও ভালো অভিজ্ঞতা দিতে হবে। কেউ যেন বলতে না পারে যে আমাকে ভোট দিতে দেয়া হয়নি।
প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্ধৃত করে প্রেস সচিব বলেন, যারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নির্বাচন পর্যন্ত পৌঁছাতে দিতে চায় না, তারা যত রকমভাবে পারবে বাধা দেবে। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে যাতে নির্বাচন না হয়। এগুলোর কিছু কিছু লক্ষণ এখন দেখা যাচ্ছে। সামনে আরও আসবে। এজন্য আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে। আমাদের চেষ্টা হবে নির্বাচন করার এবং নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচিত সরকারের হাতে আমরা ক্ষমতা হস্তান্তর করব।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচিত সরকারের হাতে আমরা ক্ষমতা হস্তান্তর করব। এই নির্বাচন নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর, সাহস অর্জনের নির্বাচন হবে বলে উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, নিজের ভূমিতে দেশ পরিচালনার নির্বাচন। এই নির্বাচনে অন্য কোনো দেশের থাবা মারার কোনো সুযোগ যেন না থাকে।
এবারের নির্বাচন অনন্য নির্বাচন হবে বলে আশাবাদ জানান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, এটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্বাচন নয়। এটা এদেশের সকল মানুষের, সকল রাজনৈতিক দলের নির্বাচন। আমরা এই নির্বাচন আয়োজনে আপনাদের সর্বাত্মক সমর্থন চাই।
প্রধান উপদেষ্টা আসন্ন দুর্গাপূজায় সকলকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন বলেও জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বৈঠকে নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, এলডিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় গণফ্রন্ট ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। অপর দিকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।