।।বিকে আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইলি দূতাবাসের দুই কর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার ২১ মে (স্থানীয় সময়) ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটাল জিউইশ জাদুঘরের বাইরে তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়। আজ
বৃহস্পতিবার ২২ মে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদন বলছে, মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন ডিসির একটি ইহুদি জাদুঘরের বাইরে দুই ইসরায়েলি দূতাবাস কর্মী নিহত হয়েছেন।
সূত্র সিবিএসকে জানিয়েছে, ক্যাপিটাল ইহুদি জাদুঘরের একটি অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়ে আসার সময় হত্যার শিকার হন ওই দুই ব্যক্তি। ঘটনাটি টার্গেট করে করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রতিবেদন বলছে, স্থানীয় সময় রাত ৯টা ৫মিনিটে এই হামলা হয়। ওই এলাকায় অসংখ্য পর্যটন স্থান, জাদুঘর এবং সরকারি ভবন রয়েছে, যার মধ্যে এফবিআইয়ের ওয়াশিংটন ফিল্ড অফিসও রয়েছে।
ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত বলেছেন, নিহত কর্মীর একজন নারী এবং অন্যজন পুরুষ। তারা ছিলেন বাগদত্তা যুগল, শিগগিরই যাদের বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কথা ছিল।
বিবিসি লিখেছে, গুলি চালানোর সময় ইসরায়েলি দূতাবাসের একাধিক কর্মচারী একটি জাদুঘরের অনুষ্ঠানে ছিলেন। সন্দেহভাজন হামলাকারী নীল জিন্স এবং নীল জ্যাকেট পরা ছিলনে।
ঘটনার পর একজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওয়াশিংটন মেট্রোপলিটান পুলিশ প্রধান পামেলা স্মিথ। তিনি বলেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তি হচ্ছে ৩০ বছর বয়সী এলিয়াস রদ্রিগেজ। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের শিকাগো শহরের বাসিন্দা।
ঘটনার আগে তাকে জাদুঘরের বাইরে অস্থিরভাবে পায়চারি করতে দেখা যাচ্ছিল। অবশ্য, পুলিশের কাছে আটক হওয়ার কোনও পূর্ববর্তী রেকর্ড পাওয়া যায়নি।
পুলিশের দাবি, হেফাজতে নেওয়ার পর তিনি ‘ফিলিস্তিনকে মুক্ত করো’ বলে বিড়বিড় করতে থাকেন।
ক্রিস্টি নোয়েম এক্সে এক পোস্টে বলেন, আমরা সক্রিয়ভাবে তদন্ত করছি এবং আরও তথ্য নেওয়ার জন্য কাজ করছি। দয়া করে ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের জন্য প্রার্থনা করুন। আমরা এই বিকৃত অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনব।
জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত এই ঘটনাটিকে ‘ইহুদি-বিরোধী সন্ত্রাসবাদের জঘন্য কাজ’ বলে অভিহিত করেছেন। রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন এক্সে লিখেছেন, কূটনীতিকদের এবং ইহুদি সম্প্রদায়ের ক্ষতি করার বিষয়টি একটি লাল রেখা অতিক্রম করছে। আমরা নিশ্চিত যে, মার্কিন কর্তৃপক্ষ এই অপরাধমূলক কাজের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজগের পক্ষ থেকে এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, নিশ্চিতভাবে ইহুদিবিদ্বেষের কারণেই ডিসির (ওয়াশিংটন ডিসি) হত্যাকাণ্ড হয়েছে। এগুলো অবশ্যই এখনই বন্ধ হতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বিদ্বেষ এবং চরমপন্থার কোনও স্থান নেই।
দুই ইসরায়েলি কর্মীকে হত্যার ঘটনাকে ইহুদিবিদ্বেষ প্রসূত সন্ত্রাসবাদ বলে আখ্যা করেছেন জাতিসংঘে ইসরায়েলি প্রতিনিধি ড্যানি ড্যানন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনি লিখেছেন, কূটনীতিবিদ এবং ইহুদি সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে হামলা চালানোর মাধ্যমে সীমা লঙ্ঘন করা হয়েছে। এই অপরাধের বিরুদ্ধে মার্কিন কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলে আমরা আশা করছি।
এ ঘটনার পর পুলিশ ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। শহরের বেশ কয়েকটি প্রধান রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, নিহতদের একজন পুরুষ এবং একজন নারী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে, তবে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।