।।বিকে রিপোর্ট।।
জুলাই সনদ জাতীয় দলিল হিসেবে তৈরি হয়েছে। তার বাস্তবায়ন দ্রুততার সঙ্গে ঘটবে। নাগরিকদের মতামতের মধ্য দিয়ে এই দিকনির্দেশনা বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে ভবিষ্যতে পরিচালনা করবে।
রাজনীতিতে মতের পার্থক্য না থাকলে তা গণতান্ত্রিক হয় না বলেও মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ।
শুক্রবার ১৭ অক্টোবর বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে বক্তব্য দানকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আলী রীয়াজ বলেন, আমাদের মতের পার্থক্য থাকবে। রাজনীতিতে মতের পার্থক্য না থাকলে তা গণতান্ত্রিক হয় না। মতের পার্থক্য থাকবে, পথের পার্থক্য থাকবে কিন্তু এক জায়গায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
বহু স্রোত যেন মোহনায় এসে মেলে, যেন আমরা বলতে পারি যে, আমাদের বহু স্রোত কিন্তু মোহনা একটি। সেটি হচ্ছে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ তৈরি করা। আমাদের বহু স্রোত, আমরা সবাই এক জায়গায়—আমরা যেকোনো ধরনের স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সবাই দাঁড়িয়ে থাকব।
অধ্যাপক আলী রিয়াজ বলেন, আমাদের যে স্বপ্ন, বাংলাদেশের মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা, তাকে ধারণ করে, তাকে অগ্রসর করে নিয়ে যাওয়ার জন্য সবার একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যে চেষ্টা, তাতে একটি দিক নির্দেশনা দেওয়ার জন্যই বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো প্রায় এক বছর ধরে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে এই জাতীয় সনদে উপনীত হয়েছেন।
তিনি বলেন, জাতীয় সনদ কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি নয়। এটি হচ্ছে নাগরিকের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর এবং রাষ্ট্রের একটি সামাজিক চুক্তি। এই সামাজিক চুক্তির প্রত্যাশা প্রত্যেকটি বিষয়ের মধ্যে জড়িত আছে।
বাংলাদেশের মানুষের সংগ্রামের তাদের কষ্টের তাদের প্রচেষ্টার প্রত্যেকটি বিন্দু যুক্ত আছে। গত বছরের জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে যারা প্রাণ দিয়েছেন, যারা আহত হয়েছেন, যারা আজকে আহত আছেন, যে জুলাই যোদ্ধারা আজকেও সামগ্রিকভাবে কষ্টকর জীবন যাপন করছেন, তাদের প্রত্যেকের অবদানের মধ্য দিয়ে এই সনদ তৈরি হয়েছে। কেননা জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থান দীর্ঘদিনের রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য যে আকাঙ্ক্ষা তার প্রতিফলন।
আলী রীয়াজ বলেন, আমরা মনে করি, রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য আমাদের যে চেষ্টা, সবার যে চেষ্টা, সেই চেষ্টা একদিনে সাফল্য অর্জন করবে না। একটি দলিল কেবলমাত্র সেটার নিশ্চয়তা দেবে না। আমরা আশা করি, এই যে জাতীয় দলিল তৈরি হয়েছে, দ্রুততার সঙ্গে এর বাস্তবায়ন ঘটবে। নাগরিকদের মতামতের মধ্য দিয়ে এই দিক-দিশা নির্দেশক বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভবিষ্যতে পরিচালনা করবে।
কিন্তু আমাদের অনেকটা পথ যেতে হবে। সেই স্বপ্ন, সেই প্রত্যাশা, সেই চেষ্টার স্মারক যতটুকু আমরা অর্জন করেছি, এটি প্রথম পদক্ষেপ। যে ধারাবাহিকতা, তার একটি মোড় ফেরানো মুহূর্ত মাত্র। আমাদের অনেকটা পথ যেতে হবে।