।।বিকে রিপোর্ট।।
ইনকিলাব মঞ্চের শহীদ মুখপাত্র ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক শরীফ ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধের দ্বিতীয় দিনে এলাকাটি জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।
আজ শনিবার ২৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মী, শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা শাহবাগ মোড়ে অবস্থিত ‘শহীদ হাদি চত্বরে’ অবস্থান নিয়েছেন।
বিপ্লবী গান, কবিতা আবৃত্তি ও নানা স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে শাহবাগ মোড়। কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবর’ এবং ‘ইনকিলাব, ইনকিলাব—জিন্দাবাদ, জিন্দাবাদ’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় ইনকিলাব মঞ্চের নেতাকর্মীরা পুনরায় শাহবাগের ‘শহীদ হাদি চত্বরে’ অবস্থান নেন।
শনিবার সকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শহীদ ওসমান হাদির কবর জিয়ারত করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। তার আগমনের পথ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইনকিলাব মঞ্চের নেতাকর্মীরা সাময়িকভাবে শাহবাগ মোড় ছেড়ে ডানদিকে সরে গিয়ে আজিজ সুপার মার্কেটের সামনে অবস্থান নেন।
জিয়ারত ও আনুষ্ঠানিকতা শেষে তারেক রহমান চলে গেলে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা পুনরায় মূল মোড়ে ফিরে আসেন এবং খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে আকাশ-বাতাস কাঁপানো স্লোগানে এলাকা মুখরিত করে তোলেন।
উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবেরের ঘোষণা অনুযায়ী, বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা এই গুরুত্বপূর্ণ মোড়টি ছাড়বেন না। সেই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার রাতও তারা রাজপথেই যাপন করেন।
অবরোধ চলাকালে বারডেম হাসপাতালের এক পাশ দিয়ে যান চলাচল সচল ছিল। আজ শনিবার বিকেল থেকে জাতীয় জাদুঘরের পাশ দিয়ে সীমিত পরিসরে যান চলাচল করতে দেখা যায়।
ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হাদি হত্যার বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই শাহবাগ অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
প্রসংগত, গত ১২ ডিসেম্বর পল্টনে সন্ত্রাসীদের গুলিতে বিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হলেও দীর্ঘ ৬ দিনের লড়াই শেষে ১৮ ডিসেম্বর তিনি শাহাদতবরণ করেন। তার এই অকাল মৃত্যুতে ছাত্র-জনতার ক্ষোভ এখন শাহবাগের রাজপথে আছড়ে পড়ছে।
আন্দোলনকারীরা সাফ জানিয়েছেন, খুনিদের আড়াল করার কোনো অপচেষ্টা সফল হতে দেয়া হবে না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা না আসা পর্যন্ত শাহবাগ মোড় তাদের দখলেই থাকবে।