।।বিকে আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় দেরা প্রদেশের সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে রাতের আঁধারে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এদিকে হামলার পর তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনও খবর পাওযা যায়নি।
মঙ্গলবার ১১ মার্চ এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে প্রতিবেদনে জানায়, সোমবার ১০ মার্চ গভীর রাতে এই হামলা চালানো হয়। ইসরায়েলি বাহিনী দেরা অঞ্চলের দুটি শহরে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে। ক্ষমতাচ্যুত বাশার আল-আসাদ সরকারের সামরিক অবস্থানগুলোকে লক্ষ্য করে এটিই ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলা।
রাষ্ট্র পরিচালিত সিরিয়ান আরব নিউজ এজেন্সি (সানা) জানিয়েছে, সোমবার রাতে রাজধানী দামেস্ক থেকে ১০৩ কিলোমিটার (৬৪ মাইল) দক্ষিণে অবস্থিত দেরার উত্তরে দুটি শহরে হামলা চালানো হয়েছে। সানা জানিয়েছে, ইসরায়েলি দখলদার বিমানগুলো দেরার উত্তরে জাব্বাব এবং ইজরা শহরের আশপাশে বেশ কয়েকটি বিমান হামলা চালিয়েছে।
যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, শহরগুলোতে অবস্থিত দুটি সামরিক অবস্থান লক্ষ্য করে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান ১৭টি হামলা চালিয়েছে: সাবেক সরকারের আর্টিলারি রেজিমেন্ট ৮৯ এবং ১২তম ব্রিগেড।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী সিরিয়ার বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় এই হামলা চালিয়েছে। সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস-এর তথ্যমতে, এই হামলার লক্ষ্য ছিল সিরিয়ার বিদ্রোহীদের দখলে যাওয়া কিছু সামরিক ঘাঁটি এবং অস্ত্রভাণ্ডার।
এছাড়া, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি বলেছেন, দক্ষিণ সিরিয়াকে সম্পূর্ণরূপে বেসামরিকীকরণ করা হবে, যা এই হামলার অন্যতম কারণ হতে পারে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ১৪-এর বরাতে জানা গেছে, হামলায় সিরিয়ার সামরিক বাহিনীর ফাঁড়ি, অস্ত্রভাণ্ডার, রাডার, ট্যাংক এবং কামান লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। ইসরায়েল দাবি করছে, সিরিয়ায় নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বাহিনীর উপস্থিতি তারা মেনে নেবে না এবং সীমান্ত এলাকায় যে কোনও সামরিক তৎপরতা প্রতিহত করা হবে।
গত বছরের ডিসেম্বরে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর থেকে ইসরায়েল সিরিয়ায় একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস-এর অনুসারে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গত বছরের ৮ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সিরিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে ৫০০ টিরও বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে এবং এই বছর এখন পর্যন্ত ২১টি নথিভুক্ত হামলা চালিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েল ও সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মধ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে এবং ভবিষ্যতেও এমন হামলার আশঙ্কা রয়েছে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গত মাসে বলেছিলেন, দক্ষিণ সিরিয়াকে সম্পূর্ণরূপে বেসামরিকীকরণ করতে হবে। তিনি সতর্ক করে দিয়েছিলেন, তার সরকার ইসরায়েলি ভূখণ্ডের কাছে সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার নেতৃত্বে দামেস্কে নতুন সরকারের বাহিনীর উপস্থিতি মেনে নেবে না।
এছাড়া বাশার আল-আসাদের অপসারণের পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ১৯৭৪ সাল থেকে অধিকৃত গোলান মালভূমিতে বাফার জোনের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে এবং অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করছে।