অমর একুশে বইমেলায় ৪র্থ দিনে নতুন বই এসেছে ৪৭টি

  • আপলোড টাইম : ০৭:৩৩ পিএম, বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ১৩৩ Time View

ঢাকা, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : অমর একুশে বইমেলা ২০২৫-এর ৪র্থ দিনে নতুন বই এসেছে ৪৭টি। এর মধ্যে গল্প ১টি, উপন্যাস ৫টি, প্রবন্ধ ২টি, কবিতা ১০টি, গবেষণা ৫টি, ছড়া ৩টি, শিশুসাহিত্য ১টি, জীবনী ৩টি, নাটক ২টি, ইতিহাস ৩টি, সায়েন্স ফিকশন ১টি ও অন্যান্য ২টি। মেলা শুরু হয় বিকেল ৩টায় এবং চলে রাত ৯টা পর্যন্ত।

বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘কুমুদিনী হাজং : জুইলৗ তারা, তারালা জুই’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পাভেল পার্থ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মতিলাল হাজং এবং পরাগ রিছিল। সভাপতিত্ব করেন আবু সাঈদ খান।

প্রাবন্ধিক বলেন, ঔপনিবেশিক জুলুমবিরোধী কৃষক আন্দোলনের এক সংগ্রামী নেত্রী কুমুদিনী হাজং। তিনি ঔপনিবেশিক শাসন, বৈষম্য, সার্বভৌমত্ব, আত্মপরিচয়, ন্যায্য মজুরি, কৃষি, ভূমি, অরণ্য কিংবা সমাজ রূপান্তরের প্রশ্নগুলো জারি রেখে লড়াই চালিয়ে গেছেন। কুমুদিনী হাজং ঔপনিবেশিক জুলুম, যুদ্ধ, মহামারি, দাঙ্গা, দখল, লুণ্ঠন, পরিবেশ-গণহত্যা ও কর্তৃত্ববাদী ইতিহাসের সাক্ষী। ব্রিটিশ আমলে অন্যায় টংক প্রথার বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা টংক আন্দোলনে বহু হাজং নারী-পুরুষ শহিদ হন। তবে এই আন্দোলনের সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত নাম কুমুদিনী হাজং। চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত থেকে শুরু করে ব্রিটিশ জুলুম, জাতিরাষ্ট্রিক জাত্যাভিমানের রক্তদাগের ভেতর দিয়ে তাই কুমুদিনীকে পাঠ করা জরুরি।

আলোচকদ্বয় বলেন, টংক আন্দোলনে কুমুদিনী হাজং-এর মতো আরো নাম না জানা অনেক নারীর প্রবল অংশগ্রহণ ছিল। তারা গ্রামে গ্রামে গিয়ে কৃষক সমিতি গঠন করেছেন, নারী-পুরুষদের উদ্বুদ্ধ করেছেন। খুব অল্প বয়স থেকেই অধিকার আদায়ের জন্য বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন কুমুদিনী হাজং। সমৃদ্ধ কৃষিজীবনের স্বপ্ন নিয়ে কৃষি ব্যবস্থা ও কৃষক সমাজকে সকল কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করার জন্য জীবন বাজি রেখে টংক আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। তাঁর সংগ্রামী জীবন, কর্ম ও অবদান নিয়ে নানামুখী গবেষণা হওয়া প্রয়োজন।

সভাপতির বক্তব্যে আবু সাঈদ খান বলেন, রাজনৈতিক ধারার বাইরেও নানা জনবিদ্রোহ, জন-আন্দোলন আমাদের জাতীয় মুক্তিসংগ্রামকে সমৃদ্ধ ও বেগবান করেছিল। টংক আন্দোলনও ছিল সেরকমই একটি আন্দোলন যার অন্যতম সংগ্রামী নেত্রী ছিলেন কুমুদিনী হাজং। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ে তুলতে হলে আমাদেরকে এদেশের সকল ধর্ম, বর্ণ ও জাতিসত্তার সংগ্রামের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ভাষা সামগ্রিকভাবে ধারণ করতে হবে।

লেখক বলছি মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন— কবি আতাহার খান, কথাসাহিত্যিক পাপড়ি রহমান।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন—কবি আবদুল হাই শিকদার, কবি সোহেল হাসান গালিব। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী ইশরাত শিউলি এবং কাজী বুশরা আহমেদ তিথি।

আজ ছিল তাহমিনা সারোয়ার পরিচালিত সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘উপান্তিক থিয়েটার’-এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী স্বর্ণময়ী মণ্ডল, অনুপম হালদার, নুরিতা নুসরাত খন্দকার, দিদারুল করিম এবং অমৃত চন্দ্র বণিক। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন রাজু চৌধুরী (তবলা), আনোয়ার সাহদাত রবিন (কী-বোর্ড), দীপঙ্কর রায় (অক্টোপ্যাড) এবং মো. অনিক মাহমুদ (গিটার)

আগামীকাল ৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘হোসেনউদ্দীন হোসেন’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন আহমেদ মাওলা। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন শহীদ ইকবাল এবং আবুল ফজল। সভাপতিত্ব করবেন মঈনুল আহসান সাবের।

সোস্যাল মিডিয়াতে নিউজটি শেয়ার করুন

আরও পড়ুন
© All rights reserved © 2025. Bangalir Khobor
Developed by Tiger Infotech