।।বিকে রিপোর্ট।।
মব’ সৃষ্টি করে একের পর এক নৈরাজ্য এবং নৃশংস হত্যাকান্ডের জেরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানীসহ সারাদেশে শুরু হয়েছে ‘চিরুনি অভিযান’।
সোমবার ১৪ জুলাই থেকে সারাদেশে একযোগে চিরুনি অভিযান শুরু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
গতকাল রবিবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা বলেন, জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর নজরদারি চালাবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ অভিযানের প্রধান টার্গেট চিহ্নিত চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, অস্ত্রধারী, মব সৃষ্টিকারী, ছিনতাইকারী, ডাকাত, দখলবাজ ও মাদক কারবারি কোথাও কোনো অপরাধী বা বিশৃঙ্খলাকারীকে ছাড় দেওয়া হবে না।
তবে আমরা সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই- আইন যেন কেউ নিজের হাতে তুলে না নেন। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব রাষ্ট্রের।
মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডের পর দ্রুত তদন্ত শুরু করা হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৬ জনকে ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয়েছে। অপরাধীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যারাই জড়িত থাকুক না কেন; তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, এসব ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অত্যন্ত তৎপর ও ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশনে যাচ্ছে এবং অপরাধীদেরকে গ্রেফতার করছে।
তিনি আরও বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে খুলনার হত্যাকাণ্ডেও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকার বিশ্বাস করে, অপরাধী অপরাধীই- তা সে যে-দলেরই হোক না কেন। রাজনৈতিক অথবা অন্য কোনো পরিচয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না এবং ভবিষ্যতেও দেওয়া হবে না। কোনো অপরাধীকেই পুলিশ প্রশ্রয় দেবে না।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, দেশে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমরা কোনো আপস করব না। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
নির্বাচন নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের মাধ্যমে আমরা নির্বাচনকে ঘিরে যেসব নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করছি, তা ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই শেষ করতে পারব বলে আশা করছি। আমাদের অংশটুকু যথাসময়ে ও সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে আমরা বদ্ধপরিকর।
চিরুনি অভিযান সম্পর্কে গতকাল রাতে পুলিশপ্রধান বাহারুল আলম বলেন, আমাদের অভিযান চলমান আছে। আমরা যে কোনো অপরাধীকেই আইনের আওতায় আনতে বদ্ধপরিকর। চাঁদাবাজি যেহেতু মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে, তাই আমরা চাঁদাবাজ গ্রেপ্তারে চিরুনি অভিযানে বিশেষ গুরুত্ব দেব। এ ছাড়া মব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব।