।।বিকে আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
টানা প্রায় দুই সপ্তাহের সংঘাতের পর ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। ইরান ও ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম যুদ্ধবিরতি শুরুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে সময় ও শর্ত নিয়ে বিভ্রান্তি রয়ে গেছে।
এর আগে ইসরায়েল ও ইরান একটি ‘সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে বলে সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক ঘোষণায় জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মঙ্গলবার ২৪ জুন এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমে একটি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন এবং জানান— এটি ঘোষণার প্রায় ছয় ঘণ্টা পর কার্যকর হবে। তার হিসাবে, রাত ১২টা (ইস্টার্ন টাইম) নাগাদ যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কথা।
ট্রুথ সোশ্যালে তিনি লেখেন, ইরান ও ইসরায়েল একটি পূর্ণাঙ্গ এবং সর্বাত্মক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।” তার ঘোষণার ছয় ঘণ্টা পর রাত ১২টা (ইস্টার্ন টাইম) থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা। তিনি আরও লেখেন, ‘যুদ্ধবিরতি এখন কার্যকর। দয়া করে এটি লঙ্ঘন করবেন না!’
ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম প্রেস টিভি জানিয়েছে, আজ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
তবে যুদ্ধবিরতির ঠিক আগে শেষবারের মতো ইসরায়েলের অভ্যন্তরে দু’দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। ইসরায়েলি চ্যানেল ১৪ জানিয়েছে, সর্বশেষ ইরানি হামলায় বীরশেবা শহরে এখন পর্যন্ত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার সংস্থার মুখপাত্র লিনয় রেশেফ জানিয়েছেন, হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি ভবনে এখনো কয়েকজন আটকা পড়ে আছেন। আহত অন্তত ২২ জন, এদের মধ্যে দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এর ঠিক কিছু সময় পর, ইরানি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম প্রেস টিভি শিরোনামে জানায়, “ইসরায়েল অধিকৃত এলাকায় ইরানের চার দফা হামলার পর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে।
ইরানের আধা-সরকারি বার্তাসংস্থা তাসনিম তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে এক লাইনের বার্তায় জানায়, যুদ্ধবিরতি এখন “বাস্তবায়নের পর্যায়ে” প্রবেশ করেছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ১২ ও ওয়াইনেট-ও জানিয়েছে যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। তবে ইরানের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া একধাপ এগিয়ে দাবি করেছে, এই যুদ্ধবিরতি “শত্রুর ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে”, যদিও সুনির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করেনি তারা।
এদিকে, ইসরায়েল সরকার এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি, যার ফলে দ্বিধা ও অনিশ্চয়তা এখনও রয়ে গেছে।
এরআগে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে তেহরানকে রাজি করাতে মধ্যস্থতা করেছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী। কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আল উদেইদ বিমানঘাঁটিতে ইরানের হামলা চালানোর কয়েক ঘণ্টার মাথায় এই আলোচনা এবং সমঝোতার খবরটি প্রকাশিত হয়।
এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পেছনে কূটনৈতিক চাপ, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় ভূমিকা, বড় ভূমিকা রেখেছে। যদিও এর স্থায়িত্ব ও কার্যকারিতা এখনো প্রশ্নবিদ্ধ।
সূত্র: সিএনএন, প্রেস টিভি, তাসনিম বার্তা সংস্থা, চ্যানেল ১২ নিউজ,