।।বিকে রিপোর্ট।।
ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’ নামে আরও একটি নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ হয়েছে, যার চেয়ারম্যান হয়েছেন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ প্রধান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনি এবং মহাসচিব হিসেবে আছেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাংবাদিক শওকত মাহমুদ।
শুক্রবার ২৫ এপ্রিল হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আনুষ্ঠানিকভাবে দলটির আত্মপ্রকাশ ঘটে। নতুন দলের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন শওকত মাহমুদ।
নতুন দলের কমিটিতে সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন, মহাসচিব শওকত মাহমুদ ও মুখপাত্র হয়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী গোলাম সারোয়ার মিলন।
নতুন দলের ঘোষনাপত্রে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, প্রতিটি গণঅভ্যুত্থান, বিপ্লব ও আন্দোলনের পর ওইসব সংগ্রামী চেতনায় নতুন নতুন রাজনৈতিক দলের অভ্যুদয় ঘটে। যেহেতু রাষ্ট্র সাজবে একাত্তর ও চব্বিশের গণজাগরণের চেতনায়, সেই আঙ্গিকে নতুন দলের আবির্ভাব অনিবার্য।
জাতির এই মাহেন্দ্রক্ষণে জাতীয় প্রত্যাশায় সকল প্রকার বৈষম্য, ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে- জনকল্যাণ, ইনসাফ ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে এবং গর্বিত জাতীয়তাবোধ দৃঢ়করণ করতে আমরা আজ নতুন এই দলের আত্মপ্রকাশ ঘোষণা করছি।”
শওকত মাহমুদ বলেন, মোটা দাগে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা, ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান- সর্বোপরি ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের চেতনায় আমরা জনতা পার্টি বাংলাদেশ গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আমাদের মূল স্লোগান হবে- গড়বো মোরা ইনসাফের দেশ। সাম্য, মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশকে বিনির্মাণের সফল অভিযাত্রায় আমরা এগিয়ে যেতে চাই।
দলের ১৮ দফা তুলে ধরে তিনি বলেন, অন্যান্য দলের তুলনায় আমাদের পার্থক্য হবে নিখাদ দেশপ্রেম, চিন্তা-চেতনায় স্বচ্ছতা ও সাহসিকতা, দলের ভেতরে-বাইরে গণতন্ত্রের অব্যাহত চর্চা, উচ্চারণে-কর্মে-জনসেবায় অভিন্ন লক্ষ্যাভিসারী হওয়া। জনগণকে রাষ্ট্রের মালিকানা ও নীতিনির্ধারণের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া।
প্রবীণদের পরামর্শে, প্রবাসীদের সক্রিয় অংশগ্রহণে তরুণদের সঙ্গে নিয়ে জ্ঞানে-বিজ্ঞানে ও উন্নয়নের আমরা জাতিকে তুলে দিতে চাই প্রত্যাশার নব সোপান।
শওকত মাহমুদ আরও বলেন, সত্যিকার অর্থে দেখতে চাই, ইনসাফ সমৃদ্ধ দৃঢ় সার্বভৌমত্বে বলীয়ান নতুন শক্তি হিসেবে এক নিরাপদ বাংলাদেশকে।
নতুন দল গঠন প্রসঙ্গে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, রাজনীতি নতুন কিছু না। আমি অনেক দিন ধরেই জনসেবা করছি। এবার সেটা একটা সংগঠিত কাঠামোর মধ্যে আনছি। আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং দেশের ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
নতুন এ দলটিতে রাজনীতিবিদ, শিক্ষক, সাংবাদিক, সাবেক আমলা ও সমাজকর্মীরা রয়েছেন বলে জানান এক সময়ের জনপ্রিয় এই চিত্রনায়ক। তার দাবি, বিদ্যমান দলগুলোর প্রতি জনআস্থা কমে যাওয়ায় দেশের মানুষ বিকল্প নেতৃত্বের সন্ধান করছে, আর ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’ সেই চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির নাম উপস্থাপন করেন ইলিয়াস কাঞ্চন।
জানা গেছে, নতুন এই দলটিতে নির্বাহী চেয়ারম্যান ও মুখপাত্র করা হয়েছে গোলাম সারোয়ার মিলনকে। ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়েছে- রফিকুল হক হাফিজ, সিনিয়র অ্যাডভোকেট এ বি এম ওয়ালিউর রহমান, রেহানা সালাম, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, এম এ ইউসুফ, সৈয়দা আজিজুন নাহার, গোলাম মেহরাজ, ব্রিগ্রেডিয়া জেনারেল (অব.) কামরুল ইসলাম এবং নির্মল চক্রবর্তীকে।
নির্বাহী কমিটিতে আরও রয়েছেন : সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এম আসাদুজ্জামান, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট এবিএম রফিকুল হক তালুকদার রাজা, আল আমিন রাজু, অ্যাডভোকেট শিউলি সুলতানা রুবী, নাজমুল আহসান, জামাল উদ্দিন, শাহাদত হোসেন, আসাদুজ্জামান ও জাকির হোসেন লিটু।
দলটির সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পেয়েছেন নূরুল কাদের সোহেল, সহ-সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর, জাকির হোসেন ও ফাতেমা বেগম।