Breaking News:


শিরোনাম :
সিলেট টেস্টে ইনিংস জয়ের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ একই দিন গণভোট ও সংসদ নির্বাচনের ঘোষণায় প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ বিএনপির একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটের আয়োজনের ঘোষণা গণদাবির বিপরীত মিরপুরে বাসে আগুন: জনতার ধাওয়ায় তুরাগে ঝাঁপ- যুবকের মৃত্যু গাজায় সেনা পাঠানোর মার্কিন প্রস্তাবে রাশিয়া-চীনের জোর আপত্তি রপ্তানি,বৈদেশিক বিনিয়োগ ও রিজার্ভসহ অর্থনীতির সবগুলো সূচকে দেশ ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে সরকার থেকে আনুষ্ঠানিক নির্দেশনার পর গণভোট নিয়ে সিদ্ধান্ত ঢাকায় শীতের আমেজ: আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে প্রধান উপদেষ্টা নিজের স্বাক্ষরিত জুলাই সনদ নিজেই লঙ্ঘন করেছেন একই দিন নির্বাচন ও গণভোট হলে সংকট তৈরি হবে

গাজায় সেনা পাঠানোর মার্কিন প্রস্তাবে রাশিয়া-চীনের জোর আপত্তি

  • আপলোড টাইম : ১১:০৮ এএম, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৫
  • ১৫ Time View
ছবি: ফাইল ফটো

।।বিকে আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে স্থিতিশীলতা রক্ষায় আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকার সীমান্তে অর্ধ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে একটি বৃহৎ সামরিক ঘাঁটি নির্মাণের পরিকল্পনার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে জোর আপত্তি জানিয়েছে রাশিয়া, চীনসহ একাধিক আরব দেশ। এতে করে মার্কিন এই প্রস্তাবটি কার্যত ঝুলে গেছে।

মূলত ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার রোডম্যাপ ও ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা না থাকায় মার্কিন এই প্রস্তাবটি নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে তীব্র মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে।

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (আইএসএফ) গঠনে জাতিসংঘের অনুমোদন নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা রাশিয়া, চীন এবং একাধিক আরব দেশের আপত্তির মুখে পড়েছে।

তারা বলছে, গাজার প্রশাসনিক কাঠামো কীভাবে হবে, আর সেই ব্যবস্থায় ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের কোনও স্থান না থাকা— এ দুটি বিষয়ই অগ্রহণযোগ্য।

জাতিসংঘে হওয়া আলোচনার বিষয়ে অবগত চার কূটনীতিকের তথ্য অনুযায়ী, নিরাপত্তা পরিষদের ভেটো-ক্ষমতাধারী স্থায়ী সদস্য রাশিয়া ও চীন দাবি করেছে— ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে যে “বোর্ড অব পিস” গঠনের কথা বলা হয়েছে, তা পুরোপুরি তুলে দিতে হবে।

স্থানীয় সময় গত বুধবার রাতে যে সংশোধিত খসড়া ফিরিয়ে দেওয়া হয়, সেখানে যুক্তরাষ্ট্র ওই বোর্ডের কথা উল্লেখ করেছিল।

তবে আগের খসড়ায় রাজনৈতিক দিকনির্দেশনার অভাব ছিল— এ অভিযোগের জবাবে নতুন খসড়ায় ফিলিস্তিনের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের কথা উল্লেখ করেছে ওয়াশিংটন।

কূটনীতিকরা বলছেন, আলোচনায় এমন শব্দচয়ন নিয়ে টানাপোড়েন নতুন কিছু নয়। তবে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা গণহত্যার পর এই আপত্তিগুলো স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা পরিষদের অন্য সদস্যদের অবস্থানে বড় পার্থক্য রয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, প্রস্তাবটি “এখনই” পাস হওয়া জরুরি। তিনি বলেন, চলমান গতি ধরে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কানাডায় জি–৭ সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমরা ভালো অগ্রগতি করছি।

গত সপ্তাহে প্রচারিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম খসড়ায় বলা হয়— ২০২৭ সাল পর্যন্ত গাজায় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি আন্তর্জাতিক বাহিনীকে বিস্তৃত ম্যান্ডেট দেওয়া হবে। আর এই বাহিনী এখনও প্রতিষ্ঠিত না হওয়া বোর্ড অব পিসের সঙ্গে সমন্বয় করবে।

এই প্রস্কাব নিয়ে সবচেয়ে বড় যে দুটি প্রশ্ন সামনে এসেছে তা হলো— এতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিষ্কার রোডম্যাপ নেই এবং ইসরায়েলি সেনারা গাজা থেকে ঠিক কবে সরে যাবে, তা নিয়েও কোনও নিশ্চয়তা নেই।

পরে প্রস্তাবের সংশোধিত খসড়ায় বলা হয়েছে— ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের সংস্কার “নিষ্ঠার সঙ্গে” বাস্তবায়িত হলে এবং পুনর্গঠনে অগ্রগতি এলে ফিলিস্তিনের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার “বিশ্বাসযোগ্য পথ” তৈরি হতে পারে। এতে আরও বলা হয়েছে, স্থিতিশীলতা বাহিনী গাজায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করলে এবং স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনলে, নির্ধারিত “মানদণ্ড ও সময়সূচি” অনুযায়ী ইসরায়েলি বাহিনী গাজা ছাড়বে।

এছাড়া কিছু সদস্য দেশ বোর্ড অব পিসে কারা থাকবে এবং এটি কীভাবে কাজ করবে— তা পরিষ্কার করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) জানিয়েছে, বর্তমান শর্তে তারা কোনও বাহিনীতে অংশ নেবে না, কারণ কাঠামো এখনো পরিষ্কার নয়।

এর আগে ইহুদিবাদী সংবাদপত্র ইয়েদিওথ আহরোনোথ জানিয়েছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকার সীমান্তে অর্ধ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে একটি বৃহৎ সামরিক ঘাঁটি নির্মাণের পরিকল্পনা করছে।

ইহুদিবাদী সংবাদপত্র ইয়েদিওথ আহরোনোথ লিখেছে, গাজা উপত্যকার সীমান্তে আমেরিকান ঘাঁটি নির্মাণের প্রাথমিক পরিকল্পনা এবং সময়সূচী সম্পর্কে অবগত ইসরায়েলি সূত্রগুলো জানিয়েছে যে ঘাঁটিটি ভবিষ্যতে যুদ্ধবিরতি বজায় রাখার জন্য এই অঞ্চলে মোতায়েন করা আন্তর্জাতিক বাহিনীর ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হবে এবং সেখানে হাজার হাজার সৈন্য থাকার ব্যবস্থা করা হবে।

তবে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন যে, গাজায় সেনা-ঘাঁটি নির্মাণের এই ধরনের পদক্ষেপ এক দখলদারিত্বের পরিবর্তে অন্য দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার প্রতীক, এবং এটি কেবল ইসরায়েলিদের জুতা বিদেশীদের জন্য প্রতিস্থাপন করার শামিল মাত্র।

নভেম্বরের গোড়ার দিকে, গাজার হামাস প্রতিরোধ আন্দোলনের একজন সিনিয়র নেতা মুসা আবু মারজুক স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে, এই গোষ্ঠীটি কখনই এই ধরনের ‘বিকল্প দখলদারিত্বের ব্যবস্থা’ সহ্য করবে না।

আমেরিকান সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওসের মতে, আইএসএফ পরিকল্পনাটি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০-দফা প্রস্তাবের প্রথম পর্যায়ের অংশ, যিনি দাবি করেন যে এটি গাজায় “যুদ্ধের অবসান” ঘটাবে।

তবে সমালোচকরা যুক্তি দিয়েছেন যে প্রস্তাবটি ইসরায়েলি দখলদারিত্ব, যুদ্ধাপরাধের জন্য জবাবদিহিতা এবং ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও ক্ষতিপূরণের অধিকারের মূল বিষয়গুলোকে উপেক্ষা করছে।

সোস্যাল মিডিয়াতে নিউজটি শেয়ার করুন

আরও পড়ুন
© All rights reserved © 2025. Bangalir Khobor
Developed by Tiger Infotech