।।বিকে রিপোর্ট।।
নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের আবেদন জমা দেওয়ার সময়সীমা আজ শেষ হচ্ছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে যে দলগুলো নিবন্ধনে আগ্রহী, তারা আজকের মধ্যেই তাদের আবেদনপত্র জমা দিতে পারবে।
নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে গেলে আর কোনো আবেদন গ্রহণ করবে না নির্বাচন কমিশন। সময়সীমা শেষ হওয়ার পরপরই শুরু হবে জমা পড়া আবেদনপত্রগুলোর প্রাথমিক যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্বাচন সহায়তা শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। এর আগে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও কয়েকটি দলের আবেদনের পর ইসি সময়সীমা দেড় মাস বাড়ায়। সংশোধিত সময় অনুযায়ী, এনসিপিসহ আরও কিছু দল আজ রবিবার ২২ জুন তাদের আবেদনপত্র জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।
দল নিবন্ধন আইন অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধনের জন্য নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে- একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কমিটি, দেশের অন্তত এক-তৃতীয়াংশ জেলায় কার্যকর জেলা কমিটি এবং অন্তত ১০০টি উপজেলা বা সমপর্যায়ের কমিটি থাকতে হবে। বা মেট্রোপলিটন থানায় ২০০ ভোটারের সমর্থনপত্রও জমা দিতে হবে। পাশাপাশি, যদি কোনো দলের প্রার্থী পূর্বে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকেন অথবা কোনো নির্বাচনে মোট বৈধ ভোটের কমপক্ষে পাঁচ শতাংশ পেয়ে থাকেন, তাহলে সেটাও নিবন্ধনের যোগ্যতার আওতায় গণ্য হয়।
নির্বাচন কমিশন (ইসি)-এর নিবন্ধন পেলে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা নিজস্ব প্রতীকে ভোটে অংশ নিতে পারবেন। তবে, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলের প্রার্থীর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ারও সুযোগ রয়েছে।
আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে ইসি শর্ত পূরণকারী দলগুলোকে নিবন্ধন সনদ দেবে, যা তাদের নিজস্ব প্রতীকে ভোটে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেবে। বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে ৫০টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধিত রয়েছে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫০টি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নিবন্ধন পেয়েছে বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি), এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ (নুরুল হক নুর), নাগরিক ঐক্য (মাহমুদুর রহমান) এবং গণসংহতি আন্দোলনসহ বেশ কিছু দল। উল্লেখযোগ্যভাবে, এসব দলের প্রায় সবগুলোই আবেদন করার পাঁচ থেকে ছয় বছর পর আদালতের আদেশে নিবন্ধন লাভ করে।
প্রসংগত, ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন প্রথা চালু হয়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৫টি দল নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন পেয়েছে। তবে পরবর্তীতে শর্ত পূরণে ব্যর্থতা ও আদালতের নির্দেশে জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি এবং জাগপা- এই পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল করে ইসি। সাম্প্রতিক সময়ে আদালতের আদেশে জামায়াতে ইসলামী ও জাগপার নিবন্ধন ফেরত এলেও, এখনো পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন থেকে এ বিষয়ে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি।