।।বিকে ডেস্ক।।
স্বৈরাচার আওয়ামী লীগে নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানকের অন্যতম সহযোগী ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ৫ মামলার আসামিকে গ্রেফতার করায় ‘মব’ তৈরি করে পুলিশের কাছ থেকে আসামিকে ছিনিয়ে নিয়েছে মোহাম্মদপুরের স্থানীয়রা।
বুধবার ১২ মার্চ মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া এলাকার বি ব্লকের ৭ নম্বর রোডে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া আসামির নাম গোলাম মোস্তফা।
তার নামে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার ঘটনায় ৫টি মামলা রয়েছে। মোহাম্মদপুর থানা, রামপুরা থানা, বাড্ডা থানা, ক্যান্টমেন্ট থানা ও চকবাজার থানায় মামলাগুলো দায়ের হয়। যার মধ্যে একটি হত্যা ও চারটি হত্যাচেষ্টা মামলা।
পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের গত ১৪ জানুয়ারি রাত ১০টায় ৫ মামলার আসামি ও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের সহযোগী গোলাম মোস্তফা এবং হাফিজুর রহমান লিকুর অন্যতম ক্যাশিয়ার ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা ও হত্যার ঘটনায় একাধিক মামলার আসামি আনিসুর রহমান সোহাগ মোহাম্মদপুর থানায় প্রবেশ করে ওসির সঙ্গে মিটিং করে। এরপর থেকে তারা মামলার আসামি হয়েও এলাকায় নিয়মিত ঘুরে বেড়ায়। আজকে এদের মধ্যে একজনকে গ্রেফতার করেও ওসির নির্দেশে তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন অধস্তন কর্মকর্তারা।
সূত্রে জানা যায়, বুধবার বেলা ১১টায় লালমাটিয়া এলাকার বি ব্লকের ৭ নম্বর রোডের ওপর মোহাম্মদপুর থানার একটি টিম গোলাম মোস্তফাকে গ্রেফতার করতে যায়। তাকে গ্রেফতার করে হাতকড়া পরানোর পর আশপাশে থাকা ৮-১০ জন সিকিউরিটি গার্ড ও স্থানীয় কয়েকজন এসে পুলিশের ওপর হামলা করে আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার সময় ধস্তাধস্তিতে পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হন।গ্রেফতার হওয়ার পর আসামি মোহাম্মদপুর থানার ওসিকে ফোন করেন। এ সময় ওসি আসামিকে ধরতে যাওয়া কর্মকর্তাদের ফোন করে আসামিকে ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে নির্দেশ দেন।শুধু তাই নয়, আসামিকে কেন তারা ধরতে গেছেন- ধমক দিয়ে কর্মকর্তাদের শাসান ওসি।
প্রতক্ষ্যদর্শী শরীফুল জানান, বেলা ১১টায় বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাসহ পুলিশের একটি টিম রাস্তা থেকে একজনকে গ্রেফতার করে। এ সময় আশপাশে থাকা ৮-১০ জন সিকিউরিটি গার্ড ও আশপাশে কয়েকজন এসে পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা করে। তাদের ওপর হামলার পরও তারা ওই লোককে হাতকড়া পরায়।
তখন পুলিশ দেখলাম ফোনে কার সঙ্গে কথা বলার পর তার হাতকড়া খুলে দিয়েছে। পরে পুলিশের কাছ থেকে জানতে পারলাম, ওই লোকের নামে একাধিক মামলা আছে। মনে হয়েছে সিকিউরিটি গার্ড ও স্থানীয় কয়েকজন মিলে পুলিশকে মেরে ফেলবে। এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে তারা।
এ ঘটনায় তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) জুয়েল রানা বলেন, আজকে সকালে মোহাম্মদপুর থানার একটি টিম বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ৫ মামলার আসামিকে গ্রেফতার করতে লালমাটিয়া এলাকায় যায়। আসামি গ্রেফতার করার বিষয়টি আমি অবগত। কিন্তু আসামি গ্রেফতারের সময় ওই আসামির লোকজন ‘মব’ সৃষ্টি করে আমাদের পুলিশের ওপর হামলা করার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ আসামিকে ছেড়ে দিয়ে চলে আসতে বাধ্য হয়। বিষয়টি আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। আমরা খুব শীঘ্রই আসামির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। সুত্র- যুগান্তর