।।বিকে রিপোর্ট।।
সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদর পালিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ দিবাগত রাতে লাইলাতুল কদর হিসেবে পালিত হয়।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলমানদের মতো বাংলাদেশের মুসলমানরাও নিজেদের গুনাহ মাফ ও মনোবাসনা পূরণের জন্য আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি এবং অধিক সাওয়াব হাসিলের আশায় নফল ইবাদত, কুরআন তিলাওয়াত, তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়, জিকির-আসকার আর বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে কাটিয়েছেন হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ এ রাত।
ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা বিভিন্ন মসজিদে জড়ো হয়ে লাইলাতুল কদরের নামাজ আদায় করেন। আল্লাহর নৈকট্য ও রহমত লাভের আশায় ইবাদত বন্দেগি করেন।
মাহে রমজানের খায়ের বরকত হাসিলের জন্য মুসল্লিরা আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় দফায় দফায় মোনাজাতে অংশ নেন।
বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মুহিববুল্লাহিল বাকী দেশ ও জাতির জন্য দোয়া ও মোনাজাত করেন ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে ২৭ রমজান শবে কদর পালন করা হয়। তবে হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী প্রতি বছর একই দিনে শবে কদর অনুষ্ঠিত হয় না। সহীহ বিশুদ্ধ হাদিস থেকে জানা যায় যে, লাইলাতুল কদর রমজানের শেষ দশ দিনের যে কোন বিজোড় রাত্রিতে হয়ে থাকে। সে হিসেবে ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ তারিখের রজনী সমূহের যে কোন একরাত লাইলাতুল কদর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা উল্লেখিত আছে।
তবে ২৬ রমজানের রাতেই শবে কদর পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মহান আল্লাহ মুসলমানদের জন্য হাজার মাসের চেয়েও উত্তম এমন একটি রাত নির্ধারণ করেছেন, যার নাম ‘লাইলাতুল কদর’।
হাদিসে এ কথাও উল্লেখিত আছে, যে কোন একটি নির্দিষ্ট বিজোড় রাত্রিতেই তা হয় না। অর্থাৎ কোন বছরে ২৫ তারিখে হল, আবার কোন বছরে ২১ তারিখে হল এভাবে। লাইলাতুল কদরের সওয়াব পেতে চাইলে ৫টি বিজোড় রাত্রেই তালাশ করতে হবে।
আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন এবং বলতেন, তোমরা রমজানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান কর। (বুখারি, ২০২০)
এ রাত এত সম্মানিত যে, এক হাজার মাস ইবাদত করলেও যে সওয়াব হতে পারে, তার চেয়ে লাইলাতুল কদরের ইবাদতের সওয়াব অনেক বেশি। যে বেশির পরিমাণ একমাত্র আল্লাহই ভালো জানেন। লাইলাতুল কদরের ফজিলত বোঝানোর জন্য মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে ‘কদর’ নামে আলাদা একটি সুরা নাজিল করেছেন।
মহান আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায়ে ধর্মপ্রাণ মুসলিম মা বোনেরাও মসজিদসহ বাসা-বাড়িতে বেশি বেশি নফল নামাজ, তাহাজ্জুদ, সালাতুস তাসবিহ, কাজা নামাজ, কুরআন তেলাওয়াত, দান-সাদকা, জিকির-আসকার, তাসবিহ-তাহলিল, তাওবা-ইসতেগফার, দুয়া-দুরুদসহ নফল আমলের প্রতি মনোযোগী ছিলেন।
উল্লেখ্য, এবার রমজান মাসে শবে কদর ও জুমাতুল বিদা একই দিনে পালন করছেন বাংলাদেশের মুসলমানরা। এবার জুমাতুল বিদা অনুষ্ঠিত হবে ২৮ মার্চ শুক্রবার। একই দিন বাংলাদেশের মানুষেরা ২৭তম রোজা পালন করবেন। ২৭তম রোজা শুরু হবে এর আগের দিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে। কারণ, আরবি তারিখের হিসাব শুরু হয় সন্ধ্যা থেকে। শুক্রবার খ্রিস্টীয় বর্ষপঞ্জির ২৮ তারিখ হলেও এ দিন ২৭ তম রমজানের রোজা পালন করা হবে।
রমজানের শেষ জুমাকে জুমাতুল বিদা হিসেবে পালন করা দিনটি মুসলিম উম্মাহর কিছু মানুষের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। বছরের শ্রেষ্ঠ মাস রমজানের শেষ জুমা হওয়ার কারণে এটি তাদের মতো অনেকের কাছে মর্যাদাশীল।