।।বিকে রিপোর্ট।।
সীমিত আকারে পেয়াজ আমদানীর অনুমতির পর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির নতুন ধাপ আজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে মোট ৬০ টন পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
রবিবার ৭ ডিসেম্বর দুপুরে ভারতীয় ট্রাকগুলো বন্দর এলাকায় প্রবেশ করে। আমদানিকৃত পেঁয়াজের মধ্যে মেসার্স গৌড় ইন্টারন্যাশনাল ৩০ টন এবং ওয়েলকাম ট্রেডার্স আরও ৩০ টন পেঁয়াজ আমদানি করেছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাকগুলো কোনো জটিলতা ছাড়াই বন্দর এলাকায় প্রবেশ করেছে এবং আনলোডিং কার্যক্রম দ্রুতগতিতে চলছে। তিনি বলেন, আমদানিকারকরা নিয়মিত এলসি খুললে প্রতিদিনই পেঁয়াজ আনা সম্ভব হবে।
বন্দরের আমদানিকারক ও শ্রমিকরা জানান, দীর্ঘদিন পর পেঁয়াজ আমদানি শুরু হওয়ায় স্থানীয় বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক করতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এদিকে সোনামসজিদ বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হওয়ায় বন্দরে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, নিয়মিত আমদানি অব্যাহত থাকলে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম শীঘ্রই আরও স্থিতিশীল হবে।
জানা গেছে পেঁয়াজ আমদানির খবরে পাবনায় একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম প্রায় অর্ধেক কমেছে। ভারত থেকে আমদানি হওয়ার খবর বাজারে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে পাইকারি হাটে মণপ্রতি দাম কমেছে ২ হাজার টাকা থেকে ২৫শ টাকার মতো। এতে ক্ষুব্ধ এ অঞ্চলের চাষিরা।
রবিবার সুজানগরের ও আতাইকুলা পেঁয়াজ হাটে প্রতি মণ আগাম জাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি হয়েছে ২২০০ টাকা থেকে ২৬০০ টাকায়। আর পুরাতন হালি পেঁয়াজ ৩ হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার ৩০০ টাকা পর্যন্ত। আগের দিন শনিবার সাঁথিয়ার বনগ্রাম হাটে পাইকারিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের ৪ হাজার থেকে ৪ হাজার ২০০ টাকা দাম ছিল। আর পুরাতন হালি পেঁয়াজের দাম ছিল ৫ হাজার ৫শ টাকা থেকে ৫ হাজার ৭শ টাকা পর্যন্ত।
এদিকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে বাজারে ধস নামায় পাবনা সদরের চরতারাপুর ইউনিয়নের কলচরী, সুজানগরের ভবানীপুরের চরের কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, যে দামের সার, কীটনাশক ক্রয় করে পেঁয়াজ লাগানো হয়েছে এতে ৩ হাজার টাকা করে বাজার দর থাকলে তবেই লাভবান হওয়া যাবে। কিন্তু ২ হাজার টাকা বা তার থেকে কম বাজার দর পেলে লোকসানের মধ্যে পড়তে হবে।
কৃষকরা জানান, এক বিঘা মুরিকাটা পেঁয়াজ আবাদ করতে প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা খরচ পড়ে যায়। বিঘা প্রতি ৫০ মন করে পেঁয়াজ উত্তোলন করা যাচ্ছে। সার-কীটনাশক ও শ্রমিক খরচ বাদ দিলে কিছুই থাকে না। সরকারের উচিত হবে বাহিরের দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি না করার। পেঁয়াজ আমদানি করলে আমরা রোকসানের মধ্যে পড়ব। কৃষকরা পেঁয়াজ আবাদে আগ্রহ হারাবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক রাফিউল ইসলাম বলেন, সরকার মাঝে মধ্যে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে। এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু তার প্রভাব পাইকারি ও খুচরা বাজারে পড়ে, দাম কমে যায়।
আবার অনেক সময় হাটবাজারে পেঁয়াজের আমদানিও বেড়ে যায়। এসব নানা কারণে পেঁয়াজের বাজার ওঠানামা করে। তবে কৃষক ২ হাজার টাকা থেকে ২ হাজার ২শ টাকা করে দাম পেলেও লাভবান হতে পারবে। এ দামটা কৃষকেরা পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।