।।বিকে রিপোর্ট।।
সদ্য বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশের রপ্তানি আয় ৮.৫৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এ সময়ে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৪৮.২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) আজ প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি আয় ছিল ৪৪.৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
তবে, ২০২৫ সালের জুনে এক মাসের রপ্তানি আয় ছিল ৩.৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) গত বুধবার পণ্য রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, বিদায়ী অর্থবছরে ৪ হাজার ৮২৮ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি তার আগের অর্থবছরের তুলনায় ৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেশি। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি হয়েছিল ৪ হাজার ৪৪৭কোটি ডলার।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, মোট ৪৮.২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়ের মধ্যে তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাত থেকে এসেছে ৩৯.৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ৮.৮৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি।
তৈরি পোশাক খাতের মধ্যে নিটওয়্যার রপ্তানি ৯.৭৩ শতাংশ বেড়ে ২১.১৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। যেখানে ওভেন পোশাক রপ্তানি ৭.৮২ শতাংশ বেড়ে ১৮.১৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
গত অর্থবছরের জুলাই-জুন সময়ে হোম টেক্সটাইল ২.৪২ শতাংশ বেড়ে ৮৭১.৫৭ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
রপ্তানিকারকেরা বলছেন, গত জুনের প্রথম সপ্তাহে পবিত্র ঈদুল আজহায় দীর্ঘ ছুটির কারণে পণ্য রপ্তানি হয়নি। আবার মাসের শেষ দিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা কর্মচারীদের কমপ্লিট শাটডাউনের কারণে ২৬ ও ২৭ জুন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ছিল। মূলত এই দুই কারণে জুনে পণ্য রপ্তানি কমেছে।
রপ্তানির সঙ্গে তাল মিলিয়ে রেমিট্যান্স আয়ের ক্ষেত্রেও এসেছে সাফল্য। বিদায়ী অর্থবছরে দেশে রেকর্ড ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৬ দশমিক ৪২ বিলিয়ন বা ২৭ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে শুধু জুন মাসেই এসেছে ২ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে অর্থবছরের শেষ দিন ৩০ জুনেই এসেছে ১১ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলার।
দেশে এত বেশি রেমিট্যান্স এর আগে কখনো আসেনি। ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৪ দশমিক ৭৭বিলিয়ন ডলারের রেকর্ডও এবার ছাড়িয়ে গেছে। এই প্রবৃদ্ধির পেছনে হুন্ডি রোধে সরকারের কঠোর অবস্থান, বৈধ পথে অর্থ পাঠাতে প্রণোদনা, এবং রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজ করাসহ নানা উদ্যোগ বড় ভূমিকা রেখেছে।
রপ্তানি ও রেমিট্যান্সের এই সাফল্যে দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে স্বস্তি ফিরেছে। ব্যাংকগুলোর মধ্যে বর্তমানে ডলার লেনদেন হচ্ছে ১২৩ টাকার মধ্যে, আমদানিতেও একই দাম কার্যকর। এর ফলে ডলার-সংকট অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছে।
বৈদেশিক আয় বাড়ায় দেশের লেনদেন ভারসাম্যেও এসেছে দৃশ্যমান উন্নতি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে চলতি হিসাবে ঘাটতি ছিল ৬ দশমিক শূন্য ২ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একই সময়ে কমে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৩৯ বিলিয়নে। এমনকি পুরো লেনদেন ভারসাম্যের ঘাটতি কমে এসেছে ৫ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন থেকে মাত্র ৬৫ কোটি ডলারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৈদেশিক বকেয়া পরিশোধ হয়ে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলোর আস্থা ফিরেছে। এতে করে মুদ্রাবাজারে চাপ কমে গেছে এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে।