।।বিকে রিপোর্ট।।
স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রাথমিক সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
শনিবার ২২ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। এর আগে গত বুধবার ফেব্রুয়ারি ১৯ স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ সুপারিশমালা হস্তান্তর করেন।
স্থানীয় সংস্কার কমিশনের প্রাথমিক প্রতিবেদনের মুখবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে, কমিশন গঠনের পরপরই এ এম এম নাসির উদ্দিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
এই কমিশন কাজ শুরু করেছে গেল বছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে। কাজের জন্য ১৫টি ক্ষেত্র নির্ধারণ করে প্রতিবেদনের কাঠামো গঠন করা হয়। পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন চূড়ান্তে আরও সময় প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন কমিশন।
ইতোমধ্যে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন গত ১৫ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে।
স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের অনুরোধে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে এ জরিপ পরিচালনা করে, যেখানে দেশের ৬৪ জেলা শহর ও গ্রামাঞ্চলের ৪৬,০৮০টি পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ৭১ শতাংশ মানুষ মনে করেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের প্রতীকের ব্যবহার হওয়া উচিত নয়, অন্যদিকে ২৪ শতাংশ মনে করেন, নির্বাচনে দলীয় প্রতীক থাকা উচিত।
দেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে একটি স্বাধীন ও শক্তিশালী স্থানীয় সরকার কমিশন গঠনের পক্ষে প্রায় ৮৪ শতাংশ মানুষ মত দিয়েছেন। এক খানা জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
জরিপের ফলাফল স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের এক প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়। ওই প্রতিবেদন বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান।
জরিপে অংশ নেয়া প্রায় ৯৭ শতাংশ মানুষ মনে করেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থীদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা উচিত। এর মধ্যে ৩৮ শতাংশ মনে করেন প্রার্থীদের এসএসসি পাস করা উচিত, ৩০ শতাংশ মনে করেন এইচএসসি এবং ২৫ শতাংশ মনে করেন ন্যূনতম যোগ্যতা স্নাতক হওয়া উচিত।
বর্তমানে স্থানীয় সরকার পরিচালনার জন্য পাঁচটি আইন এবং ১০০টিরও বেশি বিজ্ঞপ্তি ও সরকারি আদেশ রয়েছে। এ বিষয়ে ৭৭ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, স্থানীয় সরকার পরিচালনার জন্য একটি একক ও সমন্বিত আইন থাকা উচিত।
প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষ মনে করেন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর জনবল সংকট মোকাবেলায় একটি সমন্বিত সেবা কাঠামো থাকা উচিত।
দেশে ক্রমবর্ধমান নগরায়নের প্রেক্ষাপটে ৮৫ শতাংশ মানুষ উপজেলা পর্যায়ে একজন নগর পরিকল্পনাবিদ নিয়োগের পক্ষে মত দিয়েছেন।
এ ছাড়া ৮০ শতাংশ উত্তরদাতা উপজেলায় পূর্ণাঙ্গ দেওয়ানি ও ম্যাজিস্ট্রেট আদালত স্থাপনের সুপারিশ করেছেন।