শিরোনাম :
বৃষ্টি ও আলোকস্বল্পতায় ৪৪ ওভারে শেষ তৃতীয় দিনের খেলা: বাংলাদেশের লিড ১১২ বিরতি দিয়ে হলেও ২ বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ চায় বিএনপি আ.লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপির বিক্ষোভ ক্ষুদ্রঋণ ও সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে জীবন বদলে ফেলার ওপর জোর দিলেন প্রধান উপদেষ্টা মজুরি ৩ বছর পর পর মূল্যায়নের সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন পদ পেতে স্ত্রীকে তালাক দিলেন ছাত্রদল নেতা : পেলেন অব্যহতি পত্র তৃতীয় দফায় আবারও ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে বিএনপি চীন-আমেরিকা শুল্কযুদ্ধ: ফেরত গেল যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো নতুন বোয়িং বিমান কর ফাঁকি : ২৩ সালের রাজস্ব ক্ষতি ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা – সিপিডি কাতারে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা : পেলেন লালগালিচা সংবর্ধনা

বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে যুবদলের হামলা, লাঞ্ছিত ইউএনও

  • আপলোড টাইম : ১০:১৭ পিএম, সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১৫ Time View
ছবি: সংগৃহিত

।।বিকে ডেস্ক রিপোর্ট।।
নেত্রকোনার আটপাড়ায় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলাকালে মঞ্চে হামলার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা যুবদলের কয়েকজন পদধারী নেতার বিরুদ্ধে।

সোমবার ১৪ এপ্রিল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা সংলগ্ন মুক্তমঞ্চে এ ঘটনা ঘটে। অনুষ্ঠানটির  আয়োজন করেছিল উপজেলা প্রশাসন।

এসময় যুবদলের ওই নেতারা মঞ্চ থেকে শিল্পীদের নামিয়ে দেওয়াসহ সামনে বসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও অন্যান্য অতিথিদের লাঞ্ছিত করেন। অনুষ্ঠানের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে পণ্ড করে দেওয়া হয় অনুষ্ঠানটি।

অভিযুক্ত দুই যুবদল নেতা হলেন উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব নূর ফরিদ খান ও যুগ্ম-আহ্বায়ক মোদাচ্ছের হোসেন কাইয়ুম।

নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়, পুলিশ ও প্রশাসন ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, নেত্রকোনার আটপাড়ায় সকাল থেকেই প্রশাসনের উদ্যোগে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান চলছিল। এতে বিভিন্ন সামজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দ্বিতীয় অধিবেশন চলাকালীন ‘উপজেলা প্রশাসন বিদ্যানিকেতন’ এর শিক্ষার্থীরা নৃত্য পরিবেশন করছিল।

এসময় উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব নূর ফরিদ খান, যুগ্ম আহ্বায়ক মোদাচ্ছের হোসেন ওরফে কাইয়ুম, কামাল হোসেন তালুকদারসহ স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হন। পরে তারা ইউএনওকে অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলেন।

এ সময় ইউএনও কারণ জানতে চাইলে মঞ্চের ব্যানারে স্থান হিসেবে কেন ‘উপজেলা পরিষদ বঙ্গবন্ধু চত্বর’ লেখা হয়েছে, এ কথা বলে যুগ্ম আহ্বায়ক মোদাচ্ছের হোসেনের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা মঞ্চে ওঠে শিক্ষার্থীদের নামিয়ে দিয়ে মঞ্চে থাকা ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী একজন বলেন, ইউএনওসহ কর্মকর্তারা তাদের বাধা দিতে চাইলে ওই নেতারা তাদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন। তাদের মধ্যে এক নেতা উপস্থাপককে মারধর করে মাইক কেড়ে নিয়ে ইউএনওকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী এক কর্মকর্তা জানান, তখন ইউএনও বলেন- ব্যানারে তো কোনও ‘বঙ্গবন্ধু চত্বর’ লেখা নেই। তখন যুবদলের সদস্য সচিব নূর ফরিদ আবারও বলেন, না ব্যানারে বঙ্গবন্ধুর নাম আছে। ফেইসবুকেও ব্যানারের ছবি পোস্ট আছে। আমার ফোনেও এ ছবি একজন পাঠিয়েছেন। অনুষ্ঠান এখনই বন্ধ করতে হবে। বিশৃঙ্খলার কারণে একপর্যায়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে অনুষ্ঠানটি পণ্ড হয়ে যায়।

পরে দেখা যায় ফেসবুকে পোস্ট করা ‘বঙ্গবন্ধু চত্বর’র ওই ছবিটি বাংলা সন ১৪৩০ এর।

আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুয়েল সাংমা বলেন, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব নূর ফরিদের নেতৃত্বে কাইয়ুম, কামালসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী সংঘবদ্ধ হয়ে হঠাৎ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে মঞ্চের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। এ সময় আমি কারণ জানতে চাইলে আমাকেসহ কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিত করে অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেন। উপস্থাপককে মারধর করে মাইক হাতে নিয়ে আমাকে ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে আখ্যায়িত করেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

আটপাড়া উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব নূর ফরিদ খান বলেন, আমরা একটি স্থানে বসেছিলাম। হঠাৎ একজন আমার ম্যাসেঞ্জারে একটি ব্যানার দেন। ওই ব্যানারে ‘বঙ্গবন্ধু চত্বর’ লেখা ছিল। ফেসবুকেও একজন শেয়ার দিয়েছেন দেখেছি। পরে আমরা মঞ্চে গিয়ে কারণ জানতে চাই।

এ সময় আমাদের দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোদাচ্ছের হোসেন, কামাল হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক উজ্জ্বল, সদস্য সচিব রুপণ, ছাত্রদলের টিটুসহ কয়েকজন ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। পরে প্রশাসনের লোকজন আমাদের নিশ্চিত করেন যে ব্যানারে বঙ্গবন্ধুর নাম নেই। বিষয়টি আমাদের ভুল হয়ে গেছে। এর জন্য আমরা ইউএনও মহোদয়ের কাছে ভুল স্বীকার করেছি। মাফ চেয়েছি। আপনারাও বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আমরা কাউকে লাঞ্ছিত করিনি। এটা মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।

আটপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন, যখন এ ঘটনাটি ঘটেছে তখন আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম না। অভিযোগ পাওয়া গেলে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নেত্রকোনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী জানান, যে ঘটনাটি ঘটেছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। দলীয়ভাবে বিষয়টি তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস জানান, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইউএনওকে বলা হয়েছে।

সোস্যাল মিডিয়াতে নিউজটি শেয়ার করুন

আরও পড়ুন
© All rights reserved © 2025. Bangalir Khobor
Developed by Tiger Infotech