।।বিকে রিপোর্ট।।
মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়তে লড়তে অবশেষে সবাইকে ফাঁকি দিয়ে চলে গেল অসহায় শিশু আছিয়া।
বৃহস্পতিবার ১৩ মার্চ আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানানো যাচ্ছে যে, মাগুরায় নির্যাতিত শিশুটি আজ ১৩ মার্চ দুপুর ১টায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছে।
সিএমএইচের সর্বাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রয়োগ এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। শিশুটির আজ সকালে তিনবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছিল, দুবার স্থিতিশীল করা গেলেও তৃতীয়বার আর হৃদস্পন্দন ফিরে আসেনি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শিশুটির শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছে এবং যে কোনো প্রয়োজনে তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শিশুটির বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে।
শিশুটির মৃত্যুর খবরে ঢাকা সম্মিলিতি সামরিক হাসপাতালে ছুটে যান জাতীয় নাগরিক পার্টির দুই মুখ্য সংগঠক, বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।
সবশেষে আজ সন্ধ্যায় মাগুরায় সেই শিশুটির জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। মাগুরার নোমানী ময়দানে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজায় অংশ নেন অসংখ্য মানুষ। ঢাকা থেকে গিয়ে জানাজায় অংশ নেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম সহ দলটির শীর্ষ কয়েকজন নেতাও জানাজায় অংশ নেন।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর থেকে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার শিশুটির মরদেহ নিয়ে রওনা হয়। স্টেডিয়াম থেকে অ্যাম্বুলেন্সে তাকে নেয়া হয় গ্রামের বাড়িতে। সেখান থেকে পুলিশি প্রহরায় তার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
ছবি: প্রথম আলোর সৌজন্যে
এ সময় সঙ্গে ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। এছাড়া জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠন হাসনাত আব্দুল্লাহ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, মাগুরা জেলা প্রশাসক অহিদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা প্রমুখ।
মৃত্যুর খবরের পর আছিয়ার গ্রামের বাড়ি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে শোকের মাতম দেখা যায়। বাড়িতে গ্রামবাসীসহ আত্মীয়-স্বজন কান্নায় ভেঙে পড়েন। প্রতিবেশীরা ইতোমধ্যে পার্শ্ববর্তী সোনাইকুন্ডি গোরস্থানে তার কবর খননের কাজ সম্পন্ন করেছেন। সেখানেই তাকে দাফন করা হবে।
অপরদিকে ধর্ষণে অভিযুক্ত আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা শহরে আজ বিক্ষোভ মিছিল করে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ঘেরাও করে। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের ভায়না মোড়ে মহাসড়ক অবরোধ করে। এ সময় ছাত্র-ছাত্রীরা স্লোগানে স্লোগানে ধর্ষকদের ফাঁসির দাবি জানায়। পুলিশ ও সেনাবাহিনী কয়েক ঘণ্টা নির্বিকার থাকে ছাত্রদের অবরোধের মুখে।