।।বিকে আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মুসলিম মেয়র জোহরান মামদানির সঙ্গে বৈঠক শেষে এটিকে ‘দুর্দান্ত ও ফলপ্রসূ’ বলে অভিহিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
শুক্রবার ২১ নভেম্বর (স্থানীয় সময়) বিকেল ৩টার পর হোয়াইট হাউসে ওভাল অফিসে তাদের মধ্যে রুদ্ধদ্বার বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
আধঘণ্টা বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ট্রাম্প ও মামদানি। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প মামদানির প্রশংসা করেন। অথচ এই মুসলিম রাজনীতিককে তিনি কখনো জিহাদিস্ট, কখনো কমিউনিস্ট বলে সমালোচনা করেছিলেন। একসময় মামদানির নাগরিকত্ব বাতিলেরও হুমকি দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট।
নবনির্বাচিত মেয়রকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, নিউইয়র্কের মেয়র হওয়া অনেক বড় ব্যাপার। তিনি আশা করেন, মামদানি “দুর্দান্ত মেয়র” হবেন।
তিনি বলেন, তিনি সত্যিই অসাধারণ একটি নির্বাচনের লড়েছেন। প্রাথমিক থেকেই খুবই দক্ষ ও কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে লড়েছেন। তিনি সবাইকেই খুব সহজে হারিয়েছেন।
মামদানিও প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কাজ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন বলে জানান।
ট্রাম্প বলেন, আমাদের একটা দারুণ বৈঠক হলো। খুবই ভালো, খুবই ফলপ্রসূ। আমাদের একটা মিল আছে। আমরা দুজনই চাই আমাদের এই প্রিয় শহরটা ভালোভাবে এগিয়ে যাক।
ট্রাম্প বলেন, জীবনযাত্রার ব্যয়ের মতো ইস্যুতে গুরুত্ব দিয়ে সফল প্রচারণা চালানোর জন্য মামদানি প্রশংসার যোগ্য। মামদানি ‘অসাধারণভাবে প্রচারণা চালিয়েছেন’ এবং প্রতিদ্বন্দ্বীদের ‘সহজেই’ হারিয়েছেন।
বৈঠকে নিউইয়র্কের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, অপরাধ প্রবণতা, আবাসন সংকট, জীবনযাত্রার ব্যয় ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার উদ্বেগ নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে জানান ট্রাম্প ও মামদানি।
মামদানি বলেন, প্রেসিডেন্টের সাথে আমার বৈঠকটা খুবই ফলপ্রসূ ছিল। আমরা দুজনই নিউইয়র্ক সিটিকে ভালোবাসি। এই শহরেই আমাদের মিল। আর এই শহরের মানুষকে কীভাবে সাশ্রয়ী জীবন ফিরিয়ে দেয়া যায়, সেটাই ছিল আলোচনার মূল বিষয়বস্তু।
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আর আমি—আমরা দুজনই আমাদের অবস্থান নিয়ে খুবই স্পষ্ট। কিন্তু আমি যে বিষয়টির সত্যিই প্রশংসা করি, তা হলো—বৈঠকটি মতবিরোধের জায়গায় না গিয়ে বরং নিউইয়র্কবাসীদের সেবা করার যে যৌথ লক্ষ্য, সেটিকে কেন্দ্র করেই হয়েছে।
তিনি আরও যোগ করেন, এসব লক্ষ্য বাস্তবায়িত হলে ৮৫ লাখ মানুষের জীবন বদলে যেতে পারে।’ তাদের অনেকেই এখন জীবনযাত্রার খরচের তীব্র চাপে আছে, প্রতি চারজনের একজন দারিদ্র্যের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
চলতি মাসের শুরুতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করে ৩৪ বছর বয়সী ডেমোক্র্যাট নেতা জোহরান মামদানি নিউইয়র্ক সিটির ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হন। তিনি ১ জানুয়ারি বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসের কাছ থেকে দায়িত্ব নেবেন। হাতে গোনা মাত্র কয়েক দিন আগেও যে দুই নেতা মুখোমুখি অবস্থানে ছিলেন, তাদের ওভাল অফিসের এই আন্তরিক বৈঠক যেন রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই, তা আরেকবার মনে করিয়ে দেয়।
বিশ্লেষকদের ধারণা, ট্রাম্প ও মামদানির এ বৈঠক নিউইয়র্কবাসীকে আপাতত কিছুটা হলেও স্বস্তি এনে দেবে।
সূত্র: রয়টার্স