।।বিকে আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলের চলমান বর্বরতার প্রতিবাদে নিজেদের আকাশসীমায় ইসরায়েলি বিমান উড়ায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তুরস্ক।
শুক্রবার ২৯ আগস্ট এ তথ্য জানিয়েছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার তুরস্কের পার্লামেন্টে গাজা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক বিশেষ অধিবেশনে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, গত দুই বছর ধরে ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। মৌলিক মানবিক মূল্যবোধকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করেই তারা এই অপরাধ করছে বিশ্বের চোখের সামনেই।
দেশটির পার্লামেন্টে গাজা নিয়ে বিশেষ এক অধিবেশনে হাকান ফিদান বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে আমরা বাণিজ্য সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছি। তুরস্কের কোনো জাহাজকে ইসরায়েলি বন্দরে যাওয়ার অনুমতি আমরা দিই না। আমাদের আকাশসীমায় তাদের বিমান প্রবেশ করতে দিই না।
এর আগে ২০২৪ সালের মে মাসে তুরস্ক ইসরায়েলের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থগিত করে। ২০২৩ সালে দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ৭০০ কোটি ডলার। গাজায় চলমান যুদ্ধের শুরু থেকেই ইসরায়েলের তীব্র সমালোচনা করে আসছে তুরস্ক। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান একাধিকবার গাজায় হামলাকে “গণহত্যা” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এমনকি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে তুলনা করেছেন নাৎসি জার্মানির নেতা অ্যাডলফ হিটলারের সঙ্গে।
গত সপ্তাহে তার্কিস সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, ইসরায়েলের সঙ্গে সামুদ্রিক পথে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছ তুরস্ক। যদিও এ ব্যাপারে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি দেশটি। প্রতিবেদনে বলা হয়, এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় ইসরায়েলের কোনো জাহাজকে তুরস্কের বন্দরে ভিড়তে দেওয়া হচ্ছে না। অপরদিকে তুরস্কের পতাকাবাহী জাহাজকে ইসরায়েলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
আল জাজিরার সাংবাদিক রেসুল সেরদার জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তুরস্ক-ইসরায়েল সম্পর্ক ক্রমাগত অবনতির দিকে যাচ্ছে। শুধু গাজা নয়, সিরিয়ায় ইসরায়েলি হামলাও আঙ্কারার জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে।
সেরদার বলেন, তুরস্ক এখন ইসরায়েলকে নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে। আঙ্কারার কূটনীতিকরা আশঙ্কা করছেন, ইসরায়েলকে সামলাতে না পারলে ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি সামরিক সংঘর্ষও ঘটতে পারে।
উল্লেখ্য, তুরস্কের এই পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্য ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।