।।বিকে ডেস্ক।।
প্রসঙ্ঘ : সরকার প্রধান ও রাস্ট্র প্রধানের সরকারী সফর/রাস্ট্রীয় সফর-র ভিন্নতা :
সরকার প্রধানের সফরকে সরকারী সফর এবং রাস্ট্রধানের সফরকে রাস্ট্রীয় সফর বলে। প্রসিডেন্ট পদ্ধতির সরকার ব্যবস্হায় প্রেসিডেন্ট একই সাখে সরকার প্রধান ও রাস্ট্র প্রধান।
এ সফর দুভাবেও হতে পারে-সরকার প্রধানের আমন্ত্রনে ও রাস্ট্র প্রধানের আমন্ত্রনে। সরকার প্রধানের আমন্ত্রনে হলে হবে সরকারী সফর আর রাস্ট্র প্রধানের আমন্ত্রনে হলে তা হবে রাস্ট্রীয় সফর্।
এইগুলো কুটনেতিক পরিভাষার অর্ন্তগত-এটা অন্তত দেশ বিদেশের সাংবাদিকদেরকে বুঝতে হবে-জানতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীকে কখনো রাস্ট্রনায়ক বলা যাবেনা-রাস্ট্র প্রধান হবেন রাস্ট্রনায়ক-তিনি একই সাথে সরকার প্রধানও থাকতে পারেন। প্রেসিডেন্ট ও সরকার প্রধান হিসাবে একই ব্যক্তি যখন বিদেশ সফরে যাবেন-তার এই সফরকে বলা হবে সরকারী ও রাস্ট্রীয় সফর।
প্রেসিডেন্ট এরশাদ প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির সরকার ব্যবস্হায় সরকার প্রধান ও রাস্ট্র প্রধান দুটাই ছিলেন্। আর বেগম জিয়া ও শেখ হাসিনা সংসদীয় পদ্ধতির সরকার ব্যবস্হায় সরকার প্রধান বা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। প্রেসিডেন্ট পদ্ধতিতে কেবিনেটকে বলে “মন্ত্রী পরিষদ”। এই পরিষদ প্রেসিডেন্টের কাছে দায় বন্ধ থাকেন। আর সংসদীয় পদ্ধকিতে কেবিনেটেকে বলা হয় ”মন্ত্রী সভা”।এই পদ্ধাতিতে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী সভা যৌথভাবে সংসদের কাছে দায়বদ্ধ থাকেন।
বেগম জিয়ার প্রথম সরকার (৯১ সালে) দেশকে প্রেসিডেন্ট পদ্ধতি থেকে সংসদীয় পদ্ধদ্ধিতে ফিরিয়ে আনার সময় কেবিনেট ডিভিশনের নাম বাংলায় মন্ত্রী পরিষদ রেখে দেন ভুলে-যা আজো সংশোধন করf হয়নি-সরকার বেআইনী হয়ে যাবে এই আশংকায়। এই ভুলটি করেছিল ইসমাঈল জবিউল্লাহ-যার ওপর তিনি” প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির সরকার ব্যবস্হার পরিবর্তে সংসদীয় পদ্ধতির আলোকে” রুলস অব বিজনেস” সংসোধনের দায়িত্ব অর্পন করেছিলেন।
পরবর্তীতে শেখ হাসিনাকেও একই ভুল টানতে হয়েছে-সংশোধন করতে গেলে সরকার অবৈধ হয়ে যেতে পারে এই আশংকায়। তারাও শপথ নিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির মন্ত্রী পরিষদের সদস্য হিসাবে। কাজ করেছেন সংসদীয় পদ্ধতির মন্ত্রী সভার সদস্য হিসাবে- আকাশ পাতাল পার্থক্য এবং চলছে এখনো-অসাংবিধানিক ও বেআইনীভাবে সরকার।
তাদের দুজনের কেউই এই সব বুজতেন না এবং সংবিধানের বিধান ও আইন কানুনের তোয়াক্কা করতেন না-আমাদের মনেও এই ধারনার সৃস্টি হয়েছে তাদের সম্পর্কে। এই বিষয়ে আমার প্রচুর লেখালেখির কারনে শেখ হাসিনা অবশ্য একটু চালাকী করেছেন-কিন্তু ,তাতেও হয়নি-পারেননি তিনি অতীতের ভুল শোধরাতে।
দুজনের বিরুদ্ধেই ভয়াবহ গন বিক্ষোভ হযেছে এবং বহু লোক প্রান হরিয়েছে ও অগনিত সরকারী সম্পদ নস্ট হয়েছে। একজন ক্যন্টনমেন্টের বাসায় গিয়ে আশ্রয নিয়েছিলেন। আরেকজন”পেয়ারের ভারতে” গিয়ে জান বাঁচিয়েছেন। এরশাদও কেন্টনমেন্টের বাসায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন জনরোষ থেকে বাচার জন্যে।
তাই বাংলাদেশে ফাসিবাদী ও স্বৈরাচারী কে ছিলনা। আর পার্টনার ও দোসরওতো ছিল জাতীয় পার্টি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
জামায়তের সমর্থন নিয়েতো বিএনপি দুইবার সরকার গঠন করেছে-তিনবারের মধ্যে। বিএনপি তিন মেয়াদের সরকারের মধ্যে দুই মেয়াদকালতো পুরনই করতে পারেনি। এরমধ্যে আবার একমেয়াদের সরকারের আয়ু ছিল একমাস আর সংসদের মেয়াদ ছিল চার কার্য দিবস।
জনরোষের ঠেলায় চার কার্য দিবসের সংসদ ভঙ্গ করে আসতে পেরেছে কিনা জিঙ্ঘেস করুন না বিএনপির নেতাদেরকে। আমারতো এখন মনে নেই। নবগঠিত এনসিপি-র(NCP) নেতারাও দেখছি কারো শিখানো বুলি আউড়াচ্ছেন এবং একেকবার একেক কথা বলছেন।
মনে হচ্ছে-সরকার ব্যবস্হা ও পদ্ধতি নিয়ে তাদের কোন স্বচ্ছ ধারনা নেই। তাদের হয়তো ধারনাও নেই -পৃথিবীতে মুলত দুটি পদ্ধতির সরকার ব্যবস্হাই রয়েছে- ক.প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির সরকার ব্যবস্হা খ.সংসদীয় পদ্ধতির সরকার ব্যবস্হা-বাকী সব প্রকারান্তরে এর মধ্যেই রয়েছে।তাই কোনটা সরকারী সফর আর কোনটা রাস্ট্রীয় সফর হবে/বলা হবে-তার পরিসীমাও এরই মধ্যেই রয়েছে।
-ম,ম,বাসেত
(সাবেক সংসদ রিপোর্টার)