শিরোনাম :
ইসির সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিদের বৈঠক শুরু বিএনপি প্রার্থী তুলির বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার মামলা, তদন্তে পিবিআই প্লট দুর্নীতির তিন মামলায় শেখ হাসিনার ২১ বছরের কারাদণ্ড-জয়-পুতুলের ৫ বছরের কারাদণ্ড প্রবাসী ভোটার নিবন্ধনের অঞ্চলভিত্তিক সময়সীমা তুলে নিল ইসি পতাকা বৈঠকের পর দেশে ফিরল ভারতে আটক ৪ নারী মধ্যরাতে বঙ্গোপসাগরে ভূমিকম্প, কাঁপল টেকনাফ ৬ মাসে ২ লাখ কোটি টাকা বেড়ে খেলাপি ঋণ ছাড়ালো ৬ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা হংকংয়ের বহুতল আবাসিক কমপ্লেক্সে আগুন: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ ৪৫তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ: সুপারিশ করা হয়েছে ১৮০৭ জনকে নির্বাচনের আগে ব্যাংকারদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

প্লট দুর্নীতির তিন মামলায় শেখ হাসিনার ২১ বছরের কারাদণ্ড-জয়-পুতুলের ৫ বছরের কারাদণ্ড

  • আপলোড টাইম : ১২:১৭ পিএম, বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৫
  • ১৮ Time View
ছবি: সংগৃহিত

।।বিকে রিপোর্ট।।
ঢাকার পূর্বাচলের নতুন শহর প্রকল্পে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির পৃথক তিন মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাত বছর করে মোট ২১ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। এবং শেখ হাসিনার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়ের ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের ৫ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ২৭ নভেম্বর দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন এই রায় ঘোষণা করেন।

মামলায় ২৩ নভেম্বর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। পরে আদালত ২৭ নভেম্বর রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য করেন।

পৃথক তিন মামলায় আসামির সংখ্যা ৪৭। তবে ব্যক্তি হিসাবে এই সংখ্যা ২৩। শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ছাড়া অপর ২০ আসামি হলেন- সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) শফি উল হক, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, রাজউকের সাবেক উপপরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) নায়েব আলী শরীফ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মো. নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম, পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) মো. কামরুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, উপপরিচালক হাবিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব মোহাম্মাদ সালাউদ্দিন। আসামিদের মধ্যে একমাত্র মোহাম্মদ খুরশীদ আলম গ্রেফতার আছেন।

গত ১৭ নভেম্বর পৃথক এই তিন মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। এর আগে গত ৩১ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।

একটি মামলায় শেখ হাসিনাসহ আসামি ১২ জন। আরেকটি মামলায় শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয়সহ আসামি ১৭ জন। অপর মামলায় শেখ হাসিনা, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ আসামি ১৮ জন।

প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে পৃথক ৬টি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই মামলাগুলোয় শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকসহ অন্যদের আসামি করা হয়। এই ছয় মামলার মধ্যে তিনটির রায় হলো আজ।

‎‎মামলার চার্জশিটে বলা হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। তারা বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নং রাস্তার ৩টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়।

‎শেখ হাসিনার নামে ১০ কাঠার প্লট (প্লট নম্বর ৯) রয়েছে, যা রাজউক তাকে ২০২২ সালের ৩ আগস্ট বরাদ্দপত্র দেয়। সজীব ওয়াজেদ জয়ের (প্লট নম্বর ১৫) বরাদ্দপত্র ২০২২ সালের ২৪ অক্টোবর হয় এবং ১০ নভেম্বর মালিকানা-সংক্রান্ত রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়। সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বরাদ্দপত্র দেওয়া হয় ২০২২ সালের ২ নভেম্বর। মামলাগুলোতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১৬১, ১৬৩, ১৬৪, ১৬৫(ক), ৪০৯, ৪২০ এবং ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এই ধারাগুলোর মধ্যে ঘুস গ্রহণ, সরকারি দায়িত্বে অবহেলা, সরকারি সম্পদ বা আমানতের অপব্যবহার, প্রতারণা এবং অপরাধ সংঘটনে সহায়তা দেওয়ার বিষয় রয়েছে। এছাড়া দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায়ও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, যার মাধ্যমে অসাধু উপায়ে সম্পদ অর্জন এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে।‎

এর আগে মামলার রায় ঘোষনা উপলক্ষ্যে আদালত এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বাড়তি সতর্কতা গ্রহণ করা হয়েছে আদালতের প্রধান ফটকগুলোতে। এজলাস এবং আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া, গণমাধ্যমকর্মী এবং সাধারণ জনতার উপস্থিতিও বেশি দেখা গেছে।

মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার শহীদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘নিয়মিত নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টের দুই প্লাটুন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। সঙ্গে রয়েছেন বিজিবির আরও দুই প্লাটুন সদস্য।’

সোস্যাল মিডিয়াতে নিউজটি শেয়ার করুন

আরও পড়ুন
© All rights reserved © 2025. Bangalir Khobor
Developed by Tiger Infotech