।।বিকে রিপোর্ট।।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একটি নতুন স্লোগান দিয়েছেন। স্লোগানটি হলো-‘দিল্লি নয়, পিণ্ডি নয়, নয় অন্য কোনো দেশ-সবার আগে বাংলাদেশ।’
বুধবার ২৮ মে বিকেলে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে বিএনপির তিন সংগঠন ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত রাজধানীর নয়া পল্টনে ‘তারুণ্যের সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যের শেষে ভাষন দিতে গিয়ে তিনি এ শ্লোগান দেন।
এ সময় তারেক রহমান দেশপ্রেম ও জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ার ওপর জোর দেন এবং দলের নেতাকর্মীদের সেই চেতনায় উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘প্রিয় দেশবাসী, প্রিয় সমাবেশ, প্রিয় ভাই-বোনেরা, এবার আমি আপনাদের সামনে একটি ছোট্ট স্লোগান তুলে ধরতে চাই। মন দিয়ে দয়া করে সবাই শুনবেন। প্রথমে আমি স্লোগানটি বলব, মন দিয়ে শুনবেন। এরপর দ্বিতীয়বার আবার বলব, তখন আপনারা সকলে আমার সঙ্গে একসঙ্গে বলবেন।
এরপর তিনি স্লোগানটি উচ্চারণ করেন- ‘দিল্লি নয়, পিণ্ডি নয়, নয় অন্যকোনো দেশ—সবার আগে বাংলাদেশ।’
তারেক রহমান আরও বলেন, প্রিয় সমাবেশ বলুন, প্রিয় দেশবাসী বলুন দিল্লি নয়, পিণ্ডি নয়, নয় অন্যকোনো দেশ, সবার আগে বাংলাদেশ।
বিএনপির এই কর্মসূচিতে বিপুলসংখ্যক তরুণ-তরুণী, দলীয় নেতাকর্মী এবং সমর্থকেরা অংশ নেন। বক্তৃতার মাধ্যমে তারেক রহমান দলীয় নেতাকর্মীদের জাতীয়তাবাদী আদর্শে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। তিনি তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশে দলের রাষ্ট্রচিন্তা, রাজনৈতিক রূপরেখা ও ভবিষ্যৎ কৌশল তুলে ধরেন।
এর আগে দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে এ সমাবেশ শুরু হয়। সেখানে মঞ্চে রয়েছেন বিএনপি ও তিন সংগঠনের শীর্ষ নেতারা।
বেলা সাড়ে ১১টা থেকেই ছোট ছোট মিছিল নিয়ে নেতা-কর্মীরা নয়া পল্টনে আসতে শুরু করেন। দুপুর ১টার নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে কাকরাইল থেকে শুরু করে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত সড়ক মুখর হয়ে ওঠে।
ঢাকার এই সমাবেশে ফরিদপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহ থেকে যুব দল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্র দলের নেতা-কর্মীরা যোগ দিয়েছেন। রঙ-বেরঙের ক্যাপ পরা নেতাকর্মীদের হাতে ছিল লাল-সবুজ জাতীয় পতাকা এবং দলীয় পতাকা। এ সময় ‘তারুণরা বিএনপির ভ্যানগার্ড’ বলে স্লোগান দিয়েছেন।
সমাবেশ শুরুর আগে বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাস শিল্পীরা গান পরিবেশ করেছেন।
উল্লেখ্য, তরুণ-যুবকদের সংগঠিত করতে বিএনপির তিন সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং ছাত্রদলের উদ্যোগে মে মাস জুড়ে সারাদেশের ১০টি সাংগঠনিক বিভাগকে ৪টি বৃহত্তর বিভাগে ভাগ করে চারটি বড় বিভাগ ও শহরে ‘সেমিনার’ এবং ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ করার কর্মসূচির ঘোষণা করেছিল। যা নয়া পল্টনের সমাবেশের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি হলো।
এর অংশ হিসেবে গত ৯ ও ১০ মে চট্টগ্রাম, ১৬ ও ১৭ মে খুলনা এবং ২৩ ও ২৪ মে বগুড়া সেমিনার ও সমাবেশ হয়েছে।
চট্টগ্রামে ‘কর্মসংস্থান ও বহুমাত্রিক শিল্পায়ন নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’, খুলনায় ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ এবং বগুড়ায় ‘কৃষি উন্নয়ন, পরিবেশ রক্ষা ও নাগরিক সমস্যা নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
রাজধানীতে মঙ্গলবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক ভাবনা ও অর্থনৈতিক মুক্তি’ শীর্ষক সেমিনার।
তারুণের এই সমাবেশের বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী ও ছাত্র দলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বক্তব্য রাখেন।