।।বিকে আন্তর্জোতিক ডেস্ক।।
ভেনেজুয়েলার আরেকটি ‘মাদকবাহী’ নৌযানে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।
সোমবার ১৫ সেপ্টেম্বর (স্থানীয় সময়) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এ তথ্য জানান। খবর আল জাজিরার, বিবিসির।
এছাড়া নৌযানটি যুক্তরাষ্ট্রের দিকে যাচ্ছিল বলেও দাবি করেন তিনি। গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভেনেজুয়েলার সন্দেহজনক মাদকবাহী নৌযানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের এটি দ্বিতীয় হামলা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা আন্তর্জাতিক জলসীমায় ভেনিজুয়েলা থেকে আসা একটি কথিত মাদকবাহী নৌযানে হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন। তবে তিনি নৌযানটিতে মাদক ছিল এমন কোনো প্রমাণ প্রকাশ করেননি।
মঙ্গলবার ১৬ সেপ্টেম্বর বিবিসি-র এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, ‘আজ সকালে আমার নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা দ্বিতীয় দফা হামলা চালিয়েছে।
ট্রাম্পের মতে, সামুদ্রিক পথে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক প্রবেশ কিছুটা কমলেও স্থলপথে এখনো তা আসছে। তিনি বলেন, ‘আমরা কার্টেলগুলোকে জানিয়ে দিচ্ছি, স্থলপথেও তাদের থামানো হবে।
অন্যদিকে, ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো অভিযোগ করেন যে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের ‘বোমা হামলার হুমকি’ দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক পুরোপুরি ধ্বংস করেছে।
তিনি হুঁশিয়ারি দেন যে, ভেনিজুয়েলা তাদের বৈধ আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তার দেশ প্রস্তুত।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ক্যারিবীয় সাগরে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে। গত সপ্তাহে পরিচালিত প্রথম নৌযানে হামলায় ১১ জন নিহত হন। এই হামলার পর ভেনিজুয়েলা দুটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান উড়িয়ে মার্কিন যুদ্ধজাহাজকে ঘিরে ধরে।
জবাবে ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন যে, ভেনিজুয়েলার যুদ্ধবিমান যদি মার্কিন সেনাদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে, তবে সেগুলোকে গুলি করে ভূপাতিত করা হবে।
এর মধ্যেই নতুন উত্তেজনা তৈরি হয় যখন ভেনিজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ভান গিল অভিযোগ করেন যে, মার্কিন নৌবাহিনী তাদের একটি ছোট মাছ ধরার নৌযান আট ঘণ্টা ধরে অবৈধভাবে দখলে রেখেছিল। তিনি দাবি করেন যে, এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ইচ্ছাকৃতভাবে সংঘাত উসকে দিচ্ছে, যার মূল লক্ষ্য কারাকাসে ‘শাসন পরিবর্তন’। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা অনেক দেশ মাদুরোর ২০২৪ সালের জুলাই মাসের নির্বাচনে বিজয়কে স্বীকৃতি দেয়নি।
তাদের দাবি, স্বাধীন পর্যবেক্ষকের সহায়তায় সংগৃহীত প্রমাণ অনুযায়ী বিরোধী প্রার্থী এডমুন্ডো গনসালেস বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন।
এছাড়া, মার্কিন কর্মকর্তারা মাদুরোর বিরুদ্ধে ‘কার্টেল অব দ্য সানস’ নামের একটি মাদকচক্র পরিচালনার অভিযোগ এনে তার গ্রেপ্তারে ৫ কোটি ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে। তবে মাদুরো এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এটিকে ‘আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী ষড়যন্ত্র’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি ভেনিজুয়েলার জনগণকে বেসামরিক মিলিশিয়ায় যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, যা আগে রাজনৈতিক সমাবেশ ও কুচকাওয়াজে জনসমাগম বাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হতো।
সূত্র: বিবিসি