।।বিকে রিপোর্ট।।
রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে রাখাইন রাজ্যে নিরাপদ, সম্মানজনক ও স্বেচ্ছামূলক প্রত্যাবাসনের উপযোগী পরিবেশ দ্রুত নিশ্চিত করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার ৪ জুলাই জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৫৯তম অধিবেশনে ওআইসির উদ্যোগে উত্থাপিত ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক রেজ্যুলুশন গৃহীত হওয়ার প্রাক্কালে এই মন্তব্য করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত তারেক মো. আরিফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় রাখাইনে দ্রুত একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন। এটি কেবল বাংলাদেশের নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যৌথ দায়িত্ব।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও ‘আরাকান আর্মি’র মধ্যে চলমান সংঘাত মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে এবং রোহিঙ্গাদের দুর্দশা আরও বাড়িয়ে তুলছে। রাখাইন রাজ্যে চলমান হত্যাযজ্ঞ, নিপীড়ন এবং সহিংসতা এড়াতে শুধুমাত্র ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় এক লক্ষ আঠারো হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে বলে মানবাধিকার পরিষদকে অবহিত করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।
এ ছাড়া আগামী সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে রোহিঙ্গা বিষয়ে আয়োজিতব্য উচ্চ-পর্যায়ের সম্মেলনে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানকল্পে বাস্তবমুখী এবং সময়াবদ্ধ সমাধান খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
উল্লেখ্য, জেনেভায় চলমান ৫৯তম ওআইসির উদ্যোগে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের চলমান অধিবেশনে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কিত রেজ্যুলুশনটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
এদিকে, অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত রেজ্যুলুশনে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা হ্রাস পাওয়ার বিষয়টি গভীর উদ্বেগের সঙ্গে তুলে ধরা হয়। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবিক সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও সক্রিয় ও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
রেজ্যুলুশনে রাখাইনে বিচারহীনতা ও দায়মুক্তির সংস্কৃতি বন্ধে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, রোহিঙ্গাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অর্থবহ অংশগ্রহণ এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন কাঠামো গঠনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
এছাড়া বলা হয়, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের একটি স্থায়ী সমাধানে সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত বাংলাদেশ।
উল্লেখ্য, চলমান ৫৯তম অধিবেশনটি শুরু হয়েছে ১৬ জুন এবং এটি চলবে ৯ জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত।