।।বিকে আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
দেশজুড়ে বিক্ষোভ-সংঘর্ষে ১৯ জন নিহত হওয়ার পর নেপাল সরকার অবশেষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। সরকারের এক মন্ত্রী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার ৯ সেপ্টেম্বর আল জাজিরা ও রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আজ ভোরে নেপালের মন্ত্রিসভার মুখপাত্র এবং যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুঙ জানান, গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছি। এখন এগুলো সচল আছে।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিঙ্কডইন ও ইউটিউবসহ ২৬টি মাধ্যম বন্ধ রাখা হয়েছিল। সরকার বলেছিল, ভুয়া তথ্য, প্রতারণা ও ঘৃণামূলক বক্তব্য ঠেকাতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তবে এই নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে সোমবার রাজধানী কাঠমান্ডুসহ বড় শহরগুলোতে হাজার হাজার তরুণ ও শিক্ষার্থী রাস্তায় নামে। ‘জেন জি আন্দোলন’ নামে পরিচিত এই বিক্ষোভে দুর্নীতি ও অর্থনৈতিক সংকট নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
কাঠমান্ডুতে বিক্ষোভকারীরা সংসদ ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট, পানির কামান, লাঠিচার্জ এমনকি সরাসরি গুলি চালায়। এতে শুধু কাঠমান্ডুতেই ১৭ জন নিহত হন। আরেক শহর ইটাহারিতে মারা যান আরও দুজন। দেশজুড়ে আহত হয়েছেন আরও শতাধিক মানুষ।
তবে কারফিউ জারির পরও কাঠমান্ডু উপত্যকায় তরুণদের বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে নেপালি সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট।
মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যমটি বলছে, কারফিউ জারির পরও মঙ্গলবার কাঠমান্ডুর নিউ বানেশ্বরসহ উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় তরুণদের বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। পুলিশের দমনপীড়নে প্রাণহানির জেরে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এমনকি কাঠমান্ডুর বাইরে তরুণদের বিক্ষোভ দমনে পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে।
স্থানীয় প্রশাসন আইন ১৯৭১-এর ধারা ৬(৩) অনুযায়ী সব ধরনের চলাফেরা, জমায়েত, মিছিল, সমাবেশ, শোভাযাত্রা ও অবস্থান কর্মসূচি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তবে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মঙ্গলবার সকালে নিউ বানেশ্বর পার্লামেন্ট ভবনের সামনে তরুণরা জড়ো হয়। যদিও সেসময় তারা কোনও ব্যানার বহন করেনি। এক অংশগ্রহণকারী বলেন, “গতকালের ঘটনা সরকারের ব্যর্থতা প্রকাশ করেছে। আমি তরুণদের পাশে দাঁড়াতে এসেছি।”