।।বিকে রিপোর্ট।।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা দেশ ও মুসলিম বিশ্বে বৃহত্তম। শুধু বাংলাদেশেই নয়, বরং গোটা মুসলিম বিশ্বের স্মরণকালের এই বৃহৎ জানাজায় অংশগ্রহণ করেন লাখ লাখ মানুষ। কোনো মুসলিম নারীর এটিই সর্ববৃহৎ জানাজা।
বুধবার ৩১ ডিসেম্ব বিকাল ৩টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধান, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও লাখ লাখ নেতা-কর্মী জানাজায় অংশ নেন।
এ ছাড়া বিদেশি কূটনৈতিকরা এই জানাজায় অংশগ্রহণ করেন।
জানাজায় ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররমের খতিব।
এর আগে, শুধু মানিক মিয়া এভিনিউয়েই নয়, আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মানুষ অবস্থান নেয় জানাজায় অংশ নিতে। সেখানে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। ধারণা করা হচ্ছে, এটি ইতিহাসে কোনো মুসলিম নারীর সর্ববৃহৎ জানাজা। এটি শুধু বাংলাদেশ নয়, বরং মুসলিম বিশ্বের স্মরণকালের বড় জানাজা।
জানাজা ছিল লোকে লোকারণ্য। যেন তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ থেকে জানাজায় মানুষের অংশগ্রহণ ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়। স্মরণকালে এতো বড় জানাজা চোখে পড়েনি বলে জানাজায় অংশ নেওয়া অনেকেই মত দেন।
এর আগে সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় খালেদা জিয়ার মরদেহ সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় সকাল সাড়ে ১১টার পর পরই প্রবেশ করেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মরদেহবাহী গাড়ি।
এর আগে এদিন সকাল সোয়া ৯টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে মরদেহবাহী গাড়িটি তারেক রহমানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। বিএনপি’র চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কফিনের পাশে বসে কোরআন তিলাওয়াত করেন তাঁর বড় ছেলে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। পরে বেলা ১১টার দিকে খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়িবহর তারেক রহমানের গুলশান অ্যাভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাসা থেকে বের হয়। পৌনে ১১টার পর গাড়িবহর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে পৌঁছায়।
জানাজায় অংশ নেওয়া মানুষ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া আমৃত্যু দেশের মানুষের অধিকার আদায়ে যে সংগ্রাম করেছেন, আর তাঁর শেষ বিদায়ে লাখ লাখ মানুষের উপস্থিততে ইতিহাসের বৃহত্তম জনসমুদ্র তাকে কৃতজ্ঞ চিত্তে শ্রদ্ধা জানালো।
তারেক রহমান, তার স্ত্রী জুবাইদা রহমান, কন্যা জাইমা রহমান ও ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা জানাজায় উপস্থিত ছিলেন।
পরে বেগম খালেদা জিয়াকে তাঁর স্বামী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
জানাজা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা ও সেখানে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ২৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।
উল্লেখ্য, গতকাল ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেগম খালেদা জিয়া মারা যান। তাঁর মৃত্যুতে বুধবার থেকে শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর এবং ১ ও ২ জানুয়ারি) পর্যন্ত তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে সরকার। এ ছাড়া বুধবার সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
আপোষহীন দেশনেত্রী ও জাতীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে শোকে স্তব্ধ পুরো বাংলাদেশ।