।।বিকে আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ‘ইতিবাচক’ ও ‘গঠনমূলক’ আলোচনা হয়েছে।
শনিবার ১২ এপ্রিল ওমানে এ আলোচনা হয়। তবে বৈঠকে প্রত্যক্ষ নয়, বরং ওমানের মধ্যস্থতায় আলোচনা হয়েছে। ওমানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বার্তা বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছেন। আগামী সপ্তাহে উভয় পক্ষ আবার বৈঠকে বসতে সম্মত হয়েছে।
আলোচনা ইতিবাচকভাবে শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি। আলোচনার সময় দুপক্ষই শান্ত ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এই আলোচনার উদ্দেশ্য ছিল তেহরানের বাড়তে থাকা পারমাণবিক কর্মসূচি মোকাবিলা করা— যেখানে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি কোনো সমঝোতা না হয় তবে ইরানে সামরিক অভিযান শুরু করা হতে পারে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেছেন, আমার মনে হয়, আমরা আলোচনার রূপরেখার খুব কাছাকাছি আছি। আর যদি আগামী সপ্তাহে এই ভিত্তির বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছতে পারি, তবে সেটি একটি বড় অগ্রগতি হবে এবং আমরা সেই ভিত্তির ওপর বাস্তব আলোচনা শুরু করতে পারব।
তবে সম্ভাবনা রয়েছে। আলোচনা “শান্তিপূর্ণ ও ইতিবাচক পরিবেশে” হয়েছে এবং তিনি জানিয়েছেন, আলোচনার মূল লক্ষ্য হলো—আঞ্চলিক উত্তেজনা কমানো, বন্দী বিনিময়, ও কিছু সীমিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণ।
আরাকচি বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম মেয়াদ থেকে এ পর্যন্ত এটি ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম আলোচনা।
রয়টার্স জানায়, ওমান স্থানীয় সময় শনিবার ১২ এপ্রিল প্রথম দফা আলোচনার পর আগামী সপ্তাহে ফের সংলাপের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে ওয়াশিংটন ও তেহরান।
ট্রাম্পের দুই মেয়াদে এবারই প্রথম তেহরানের সঙ্গে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় বসল ওয়াশিংটন।
হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জানায়, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভেন উইক ওমানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আনা এসক্রোগিমা এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্বাস আরাকচিকে নিয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা ‘খুবই ইতিবাচক ও গঠনমূলক’ হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই বিষয়গুলো অত্যন্ত জটিল, তবে আজ বিশেষ দূত উইটকফের সরাসরি যোগাযোগ পারস্পরিক উপকারে পৌঁছানোর পথে একটি অগ্রগতি।” উভয় পক্ষ আবার আগামী শনিবার সাক্ষাৎ করতে সম্মত হয়েছে।
ইরানের চাওয়া অনুযায়ী, দুই দেশের আলোচনাটি ছিল পরোক্ষ। তবে ট্রাম্প চেয়েছিলেন দুই পক্ষ মুখোমুখি হয়ে এ আলোচনা করুক। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘেয়ি জানান, দুই পক্ষ আলাদা আলাদা রুমে ওমানের মাধ্যমে তাদের বার্তা পৌঁছে দেয়।
অন্যদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাকচি বলেন, আলোচনা শেষে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য সামনা সামনি দেখা হয়েছে ইরানের প্রতিনিধিদলের।
ট্রাম্প গত সোমবার হঠাৎ ঘোষণা দেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান ওমানে আলোচনা শুরু করবে। উল্লেখ্য, এর আগেও পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছে ওমান।