।।বিকে রিপোর্ট।।
মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে বাংলাদেশের আজ এক যুগে প্রবেশ করলো। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সঙ্গে বিশ্বের ৫৪ তম দেশ হিসেবে ‘আর্টেমিস চুক্তি’ সেই করেছে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার ৮ এপ্রিল রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন ও ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের উপস্থিতিতে প্রতিরক্ষা সচিব মো. আশরাফ উদ্দিন এ চুক্তিতে সই করেন।
এ উদ্যোগের মাধ্যমে বৈশ্বিক মহাকাশ গবেষণা, মহাকাশ ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও মহাকাশ সম্পদের দায়িত্বশীল ব্যবহারে যুক্ত হলো বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে চৌধুরী আশিক মাহমুদ বলেন, চুক্তিটি সইয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মহাকাশ গবেষণায় সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ তার মহাকাশ গবেষণা কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে সক্ষম হবে।
এই চুক্তির মাধ্যমে, নাসার অভিজ্ঞতা এবং কারিগরি জ্ঞান বাংলাদেশের তরুণ গবেষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনিময় হবে, যা বাংলাদেশের মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে।
এতদিন, নাসার মহাকাশ অভিযানগুলো সম্পর্কে জানার সুযোগ ছিল না, কিন্তু এই চুক্তির পর বাংলাদেশের গবেষকদের জন্য বিশ্বমানের তথ্য এবং অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ তৈরি হবে। বাংলাদেশের কর্মকর্তারা আশা করছেন, এই চুক্তি বাংলাদেশের মহাকাশ গবেষণায় একটি নতুন যুগের সূচনা করবে।
মহাকাশ গবেষণায় নাসা যে ধরনের তথ্য এবং কার্যক্রম পরিচালনা করে, সেগুলো বাংলাদেশে শেয়ার করা হবে। বাংলাদেশ এখন মহাকাশ গবেষণায় অংশগ্রহণ করতে আগ্রহী এবং এ উদ্দেশ্যে একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে মহাকাশ গবেষণা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
প্রতিরক্ষা সচিব আশরাফ উদ্দিন বলেন, আর্টেমিস চুক্তি মূলত আউটার স্পেস ট্রিটি রেজিস্ট্রেশন কনভেনশন ও অ্যাস্ট্রোনট রেসকিউ এগ্রিমেন্টের নীতিগুলো অনুসরণ করে তৈরি একটি নির্দেশিকা, যা মহাকাশের শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও টেকসই ব্যবহারে সহায়ক।
তিনি বলেন, মহাকাশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণার জন্য ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান (স্পারসো) প্রতিষ্ঠা করা হয়। তারপর থেকে বাংলাদেশ মহাকাশের শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি অনুসরণ করছে।
তিনি আরও বলেন, চুক্তি সই করা দেশগুলো মহাকাশে স্বচ্ছ ও দায়িত্বশীল কার্যক্রম পরিচালনার প্রতিশ্রুতি দেয়।
চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত ৫৩টি দেশ এ চুক্তিতে সই করেছে। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, অস্ট্রেলিয়া। এছাড়াও ইউরোপ ও ল্যাটিন আমেরিকারে বেশ কয়েকটি দেশ এ চুক্তিতে সই করেছে।
চুক্তিটিতে সইয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক মহাকাশ জোটের অংশীদার হবে বলে উল্লেখ করেন আশরাফ উদ্দিন।
তিনি যোগ করেন, চুক্তিটি স্পারসো ও নাসার মধ্যে সহযোগিতার পথ উন্মোচিত করবে এবং মহাকাশ অভিযানকে আরও এগিয়ে নিতে স্পারসোর বর্তমান সক্ষমতাকে আরও বৃদ্ধি করবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা উইংয়ের মহাপরিচালক ও চিফ অব প্রোটোকল এএফএম জাহিদ-উল-ইসলাম এবং স্পারসো চেয়ারম্যান মো. রাশেদুল ইসলাম।