।।বিকে রিপোর্ট।।
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বহু ধরনের ষড়যন্ত্রের কথা আমরা জানতে পেরেছি। যে জনগণ এত মূল্য দিয়ে পরিবর্তন এনেছে, সেই জনগণ এ দেশে আরেকটা ফ্যাসিবাদ তৈরি হতে দিবে না- বলেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, যে জনগণ শেখ হাসিনাকে বিদায় করতে পেরেছে, সেই জনগণ ষড়যন্ত্র মোকাবিলায়ও প্রস্তুত রয়েছে।
শুক্রবার ৪ জুলাই সন্ধ্যায় রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জামায়াতের বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমরা বহু ধরনের ষড়যন্ত্রের আভাস পাচ্ছি। শেখ হাসিনার হাতে সব বাহিনী, ক্ষমতা ও প্রভাব থাকা সত্ত্বেও জনগণের জাগরণের মুখে তাকে বিদায় নিতে হয়েছে। যারা পরিবর্তন এনেছে, তারা আরেকটি ফ্যাসিবাদ মেনে নেবে না।”
তিনি লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানায় ভাঙচুরের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, ‘পাটগ্রাম কী হয়েছে তারা আপনারা দেখছেন, সারা বাংলাদেশকে পাটগ্রাম বানিয়ে ফেলছে এক দল। এই অবস্থায় দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন কল্পনাও করা যায় না। নির্বাচনে কালো টাকার খেলা আর হতে দেওয়া হবে না। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সংস্কার করা প্রয়োজন।
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য মৌলিক রাজনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজন উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, আমরা সংস্কারের দাবিতে সোচ্চার হয়েছি এবং তা আদায় করে ছাড়ব।
তিনি আশ্বস্ত করেন, জামায়াত সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু মানে না, আমরা জনগণের পাহারাদার হতে চাই, দেশের মালিক নয়।
জামায়াত আমির বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছর ধরে জামায়াত তার সাধ্যমতো জনগণের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ঘরে-বাইরে লড়াই করছে। স্বৈরাচার সরকার আমাদের সংগঠনের মাথা থেকে শুরু করে ১১ জন নেতাকে আমাদের মাঝে থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে। আমাদের ওই সমস্ত নেতারা বেঁচে থাকলে বাংলার প্রতিটি প্রান্তরে ঘুরে ঘুরে আশা হারানো জাতিকে আশা দেখাতেন।’
আওয়ামী লীগের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, যারা আমাদের পাকিস্তানি বলে গালি দিয়েছিল, তারা ভারতে পালিয়ে গিয়েছে। আমাদের কোনো নেতা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়নি। আমাদের নেতারা দুনিয়ার কোনো অপশক্তিকে পরোয়া করেনি। হুমকি-ধামকিকে পাত্তা দেইনি। তারা হাসতে হাসতে ফাঁসির মঞ্চে গিয়েছিল।’
জামায়াত আমির বলেন, আমরা এমন একটি সমাজ প্রতিষ্ঠিত করতে চাই, যে সমাজে কোনো বৈষম্য থাকবে না। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে নিয়ে আমরা এগিয়ে যাব। আমরা সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু মানি না। এটা বলেই তাদের নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা মনে করি সকলেই বাংলাদেশের নাগরিক। সকলেই সমান সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে। ওরা মালিক হয়েছিল রাষ্ট্রের। আমরা সেবক হব জনগণের।
জনসভার প্রধান বক্তা জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এ টি এম আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ফাঁসির মঞ্চ থেকে লক্ষ জনতার মঞ্চে উপস্থিত হয়েছে। মিথ্যা স্বাক্ষীর মাধ্যমে আমাকে ফাঁসি দেওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছিলো। যে গলায় ফাঁসির দড়ি পড়ার কথা ছিল সেখানে ফুলের মালা পড়ানো হচ্ছে। আমার কারও প্রতি কোনো ক্ষোভ নেই।’
জুলাই অভ্যুত্থানের শহিদ, রংপুরের সন্তান আবু সাঈদকে স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘আবু সাঈদের বুকের তাজা রক্তের মাধ্যমেই আন্দোলনে দেশ উত্তাল হয়ে উঠিছিল। আবু সাঈদের আত্মত্যাগের কারণেই আমি মুক্ত হয়েছি। আমি চাই আবু সাঈদের হত্যার বিচার দ্রুত বাস্তবায়ন করা হোক।’