ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিচারের জন্য ফেরত পাঠানোর অনুরোধ পেলেও এখনও কোনো সিদ্ধান্ত দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কৃতি বর্ধন সিং।
বৃহস্পতিবার ৬ ফেব্রুয়ারী রাজ্যসভার অধিবেশনে জন বৃত্তাসের লিখিত প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য তুলে ধরেন তিনি।
শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে ভারতের সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় আলোচনার সময় লিখিত প্রশ্নে রাজ্যসভার সদস্য জন বৃত্তাস জানতে চান, বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়েছে কিনা, চেয়ে থাকলে তারা কারণ হিসেবে কী বলেছে এবং ভারত সরকার তার প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশ সরকারকে জানিয়েছে কিনা।
জবাবে কৃতি বর্ধন বলেন, বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়েছে। কারণ হিসেবে তারা বলেছে, দেশ ছাড়ার আগে শেখ হাসিনা বিভিন্ন ‘অপরাধ’ করেছেন।
তবে এ বিষয়ে ভারত সরকার বাংলাদেশকে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো জানায়নি।
উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বরে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ভারত সরকারের প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, আমরা আমাদের অবস্থান সম্পর্কে ভারতকে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছি। আমরা বলেছি, আমরা তাকে (শেখ হাসিনা) বিচারিক প্রক্রিয়ার জন্য ফেরত চাই।
প্রবল গণ আন্দোলনের মুখে গত ৫ অগাস্ট ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে সেখানেই আছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তার দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের কয়েকজন গ্রেফতার হলেও অধিকাংশই এখনও আত্মগোপনে রয়েছেন।
এর মধ্যেই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকারের চালানো দমন পীড়নকে ‘গণহত্যা’ বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুবনালে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ৫ জুলাই থেকে ৫ অগাস্ট পর্যন্ত সময়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে সারাদেশে ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের’ অর্ধশতাধিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন অফিসে জমা পড়েছে।
এর মধ্যে একটি মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এবং আরেক মামলায় তার পরিবারের সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে ট্রাইব্যুনাল। প্রায় তিনশ মামলায় শেখ হাসিনার বিচার চলার মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় তাকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে গত ২৩ ডিসেম্বর ভারত সরকারকে ‘কূটনৈতিকপত্র’ পাঠায় অন্তর্বর্তী সরকার।