নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা হস্তান্তর : দ্রুত বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার তাগিদ

  • আপলোড টাইম : ০৮:৪০ পিএম, শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১৪৭ Time View
ছবি: বাসস

।।বিকে রিপোর্ট।।
নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করতে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের যেসব সুপারিশ এখনি বাস্তবায়নযোগ্য তা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

শনিবার ১৯ এপ্রিল বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন হস্তান্তর করে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্যরা।  

নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণের পর এই নির্দেশনা প্রদান করেন প্রধান উপদেষ্টা।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যে সুপারিশগুলো দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য সেটা যেন আমাদের মাধ্যমে হয়ে যায়। আমরা যেন এই কাজের মাধ্যমে বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারি। পৃথিবীর মেয়েরা এটার দিকে তাকিয়ে আছে। তারা এটা নিয়ে পর্যালোচনা করবে। অনুপ্রাণিত হবে। অন্য দেশের নারীরাও এটা নিয়ে আগ্রহী।

তিনি বলেন, এটা শুধু নারীদের বিষয় নয় সার্বিক বিষয়। এই প্রতিবেদন ছাপিয়ে বিলি করা হবে। এটা পাঠ্যবইয়ের মতো বই আকারে ছাপা হবে। দলিল হিসেবে অফিসে রেখে দিলে হবে না, মানুষের কাছে উন্মুক্ত করে দিতে হবে।

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের এই প্রস্তাবগুলো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছেও নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানান অধ্যাপক ইউনূস।

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভিন হক বলেন, জুলাইয়ে যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের স্মরণার্থে এমন কিছু করতে চেয়েছি যা মানুষের জন্য কল্যাণকর হবে, সমাজের জন্য কল্যাণকর হবে।

সুপারিশগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, কিছু এ সরকারই করে যেতে পারবে, কিছু পরের নির্বাচিত সরকার করতে পারবে এবং নারী আন্দোলনের আশা-আকাঙ্খাগুলো আলাদা করে তুলে ধরা হয়েছে।

সংস্কার কমিশন ১৫টি বিষয়ে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে।

উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৪ সালের নভেম্বরে ‘নারীপক্ষ’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও মানবাধিকারকর্মী শিরিন পারভীন হককে প্রধান করে ১০ সদস্যের নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় সংসদে উচ্চকক্ষ করার সিদ্ধান্ত হলে ৫০ শতাংশ আসনে আনুপাতিক হারে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যে নারী-পুরুষ প্রার্থী দেবেন তা ‘জিপার’ পদ্ধতিতে মনোনয়ন করবেন। যাতে প্রত্যেক দল থেকে সমান সংখ্যক নারী ও পুরুষ মনোনীত হয়। বাকি ৫০ শতাংশ আসনে নির্দলীয় ভিত্তিতে অন্যান্য গোষ্ঠীর মাঝে ৫টি নারী আন্দোলনের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।

এতে আর বলা হয়, রাজনৈতিক দলের মধ্যে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক চর্চার প্রসার এবং অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা। রাজনীতিতে সামাজিক ও দুর্নীতি বিষয়ক বাধা দূর করতে বিধি প্রণয়ন করা। আরপিও-তে নারীর অংশগ্রহণ বিষয়ক বিধান পালন বাধ্যতামূলক করা।

স্থানীয় সরকার পর্যায়ে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি সাধারণ আসন এবং একটি নারী আসন থাকবে। এই ব্যবস্থা অস্থায়ী বিশেষ পদক্ষেপ হিসেবে আগামী তিনটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রযোজ্য হবে। নারী সংসদ সদস্যদের নারী সমাজের কাছে জবাবদিহি করার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করারও সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে শিরীন হকের নেতৃত্বে কমিশনের সদস্য ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অব গভর্নেন্স এন্ড ডেভেলপমেন্টের সিনিয়র ফেলো মাহীন সুলতান, এডভোকেট কামরুন নাহার, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কল্পনা আক্তার, নারী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ হালিদা হানুম আক্তার, বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র সামাজিক উন্নয়ন উপদেষ্টা ফেরদৌসী সুলতানা এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি নিশিতা জামান নিহা উপস্থিত ছিলেন।

সোস্যাল মিডিয়াতে নিউজটি শেয়ার করুন

আরও পড়ুন
© All rights reserved © 2025. Bangalir Khobor
Developed by Tiger Infotech