।।বিকে আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
দখলদার ইসরায়েলের বর্বর হামলার মধ্যেই ঈদুল আজহা উদযাপন করছেন ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার মানুষ।
শুক্রবার ৬ জুন মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের মতো গাজায়ও আসে ঈদের দিন। তবে দখলদার ইসরায়েলের সেনাদের হামলার কারণে স্বাভাবিক ঈদ উদযাপন করতে পারেননি তারা।
ইসরায়েলী হামলায় ধ্বংসপ্রায় গাজার ধ্বংসস্তুপের পাশেই তারা ঈদের জামাত আদায় করেছেন। বার্তাসংস্থা এএফপি গাজার মানুষ কেমন ঈদ কাটাল সেটির চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করেছে।
তাদের প্রকাশিত একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, দুই নারী তাদের মৃত আত্মীয়র কবরের পাশে বসে আছেন। আরেকটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে গাজার মানুষকে ঈদের নামাজ পড়তে দেখা যাচ্ছে—
এমন অবস্থায় পবিত্র ঈদুল আজহার দিনেও ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা অব্যাহত রয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে বর্বর নেতানিয়াহু বাহিনীর হামলায় গাজাজুড়ে ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে আল জাজিরা জানিয়েছে।
খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে, গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহর পশ্চিম ও উত্তরে ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি বাহিনীর গোলাবর্ষণে সাত ফিলিস্তিনি নিহত হন।
এই হামলার মধ্যেই মার্কিন-ইসরায়েল সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)’ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গাজায় সব ধরনের ত্রাণ কার্যক্রম বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঈদের সকাল যেখানে উৎসবের হওয়ার কথা ছিল, সেখানে গাজায় বয়ে গেছে রক্তের ধারা।
স্থানীয় সময় শুক্রবার, খান ইউনিসসহ গাজার উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও, ঈদের দিনেও উপত্যকাটিতে বন্ধ রয়েছে ত্রাণ সহায়তা।
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার গাজার আহলি হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় আহত এক সাংবাদিক মারা গেছেন। এ নিয়ে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গাজায় নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা ২২৬ জনে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বংসের মুখে রয়েছে। পাশাপাশি, বৃহত্তম শহর খান ইউনিসের একমাত্র সরকারি হাসপাতাল অকার্যকর হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
একইদিন, ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে তার দেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে, কবে স্বীকৃতি দেবে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নেতানিয়াহু বাহিনীর হামলায় নিহত হয়েছেন ৫৪ হাজার ৬৭৭ ফিলিস্তিনি। যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নারী ও শিশু। আহত এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছে কয়েক লাখ মানুষ।