।।বিকে রিপোর্ট।।
অবশেষে সরকারের কঠোর সিদ্ধান্তের পর উপদেষ্টা কমিটি ও ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড তথা এনবিআরের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে।
রবিবার ২৯ জুন রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে চলমান আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সঙ্গে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি দলের বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এ কথা জানান ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাসান মাহমুদ তারেক।
রাজধানীর তেজগাঁওস্থ বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। জানা গেছে, সরকারের কমিটি গঠন ও ব্যবসায়ী সংগঠনের আশ্বাসে কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
এর আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) চলমান আন্দোলন ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নেয় সরকার। জাতীয় স্বার্থবিধ্বংসী কর্মকান্ড থেকে আন্দোলনকারীরা সরে না এলে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে।
এ ছাড়া উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জনস্বার্থ রক্ষায় সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন সব কাস্টম হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট এবং শুল্ক স্টেশনগুলোর সব শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যক পরিষেবা (এসেনশিয়াল সার্ভিস) ঘোষণার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
পাশাপাশি উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৫ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটিও গঠন করা হয়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এ কমিটির সভাপতি। সদস্য হিসেবে আছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন।
এদিকে এনবিআরের ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির তথ্য অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। এ ৬ কর্মকর্তার মধ্যে ৫ জনই এনবিআরে চলা সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতৃত্বাধীন আন্দোলন কর্মসূচির নেতৃত্বে আছেন।
উল্লেখ্য, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এ আন্দোলনের অংশ হিসেবে দ্বিতীয় দিনের মতো আজও পালিত হয়েছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ এবং ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি।
আগের কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় তারা গতকালও দ্বিতীয় দিনের মতো কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালন করেন। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে তারা সারাদেশে সংস্থার সব কাস্টম হাউস, ভ্যাট কমিশনারেট ও আয়কর অফিসে কর্মবিরতি পালন করেন। এতে কোনো অফিসেই কাজকর্ম হয়নি। গ্রাহকরা সেবা নিতে পারেননি। সেবা না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েন ব্যবসায়ীরা।
শাটউাডনের কারণে ইতোমধ্যেই ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়েছে। আমদানি পণ্য খালাস হচ্ছে না, জাহাজে উঠছে না রপ্তানিমুখী পণ্য। শুল্ক-কর আদায় হচ্ছে না। অর্থবছরের শেষ সময়ে বিপুল অঙ্কের বকেয়া রাজস্ব আদায়ের কথা থাকলেও আদায় হচ্ছে না। মোট কথা, পুরো রাজস্ব ব্যবস্থাপনা স্থবির হয়ে পড়েছে। এনবিআর বিভক্তির জেরে সংস্থার চেয়ারম্যানকে অপসারণের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরেই আন্দোলন করছেন এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ইতিপূর্বের খবরে বলা হয়, আন্দোলন স্থগিত না করায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আন্দোলনরতদের সঙ্গে বৈঠক করেননি।