।।বিকে আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
গাজা উপত্যকা পুরোপুরি দখলে নেওয়ার পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা। এক সরকারি বিবৃতিতে গাজা পুরোপুরি দখলের পরিকল্পনায় ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার অনুমোদনর কার্যালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
শুক্রবার ৮ আগস্ট টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) গাজা দখলের যে পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছে, তা মন্ত্রিসভায় পাস হয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ‘হামাসকে পরাজিত করার রূপরেখা’কে অনুমোদন দিয়েছে নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার সদস্যরা।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে অবস্থানরত বেসামরিক মানুষের জন্য মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল। পাশাপাশি হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির জন্য যেসব শর্ত ইসরায়েল দেবে, তার মধ্যে পাঁচটি মূলনীতির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন মন্ত্রিসভার বেশিরভাগ সদস্য।
এই পাঁচটি মূলনীতি হলো—হামাসকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ, জিম্মি অবস্থায় থাকা বাকি ৫০ জনকে মুক্ত করা (যাদের মধ্যে আনুমানিক ২০ জন জীবিত), গাজা উপত্যকার সামগ্রিক নিরস্ত্রীকরণ, অঞ্চলটিতে ইসরায়েলি নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং হামাস বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নয়—এমন একটি বিকল্প বেসামরিক সরকারের হাতে গাজার প্রশাসন তুলে দেওয়া।
এর আগে বৃহস্পতিবার ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, গাজা দীর্ঘমেয়াদে দখলে রাখার পরিকল্পনা নেই। বরং সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শেষে অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ এমন একটি বেসামরিক প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হবে, যারা ‘ইসরায়েল ধ্বংসে আগ্রহী নয়’। তবে কার হাতে শাসনভার দেওয়া হবে, তা স্পষ্ট করেননি তিনি।
নেতানিয়াহু আরও বলেন, ‘আমরা গাজা থেকে হামাসকে উৎখাত করতে চাই, কিন্তু অঞ্চলটি নিজের কাছে রাখতে চাই না। আমরা সেখানে নিরাপত্তা বেষ্টনী চাই, শাসন নয়। আমরা এমন আরব নেতৃত্বের হাতে গাজা তুলে দিতে চাই, যারা অঞ্চলটি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারবে এবং আমাদের জন্য হুমকি হবে না।’
তবে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর এই পরিকল্পনার কড়া সমালোচনা করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ। তিনি মন্তব্য করেন, ‘এ ধরনের প্রস্তাব মানে আরও দীর্ঘ যুদ্ধ, আরও জিম্মির প্রাণহানি এবং বিপুল অর্থের অপচয়।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জ্যেষ্ঠ ইসরায়েলি কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে রভিদ আরও বলেন, ইসরায়েলের লক্ষ্য হল ৭ অক্টোবরের মধ্যে গাজা শহর থেকে সমস্ত ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিককে কেন্দ্রীয় শিবির এবং অন্যান্য এলাকায় সরিয়ে নেওয়া।
রভিদ এক্স-এ লিখেছেন, ‘গাজা শহরে থাকা হামাস জঙ্গিদের উপর অবরোধ আরোপ করা হবে এবং একই সঙ্গে গাজা শহরে স্থল আক্রমণ চালানো হবে।’
ওয়াশিংটন ডিসিতে আল জাজিরার সংবাদদাতা শিহাব রত্তানসি বলেছেন, গাজা দখলের ইসরায়েলের পদক্ষেপ বেশ কয়েক দিন ধরে টেলিগ্রাফে প্রচারিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যা করতে চান তার সবই ডোনাল্ড ট্রাম্প অনুমোদন করেছেন। তিনি বলেছেন যে- “এটি ইসরায়েলিদের উপর নির্ভর করবে”।’