।।বিকে রিপোর্ট।।
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে কুমিল্লার মুরাদনগরে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে হামলা, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এই ঘটনায় আসিফ মাহমুদের কমপক্ষে ১০ জন সমর্থক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
বুধবার ৩০ জুলাই বিকালে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা সদরের আল্লাহু চত্বরে এ হামলা ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিকালে ‘মুরাদনগরের সর্বস্তরের জনতা’ ব্যানারে আসিফ মাহমুদের সমর্থকরা বিক্ষোভ সমাবেশের জন্য জমায়েত হন।
একই সময় ‘আল্লাহু চত্বরে’ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ সমর্থিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেন।
এ সময় আসিফ মাহমুদের পক্ষের সমাবেশ লক্ষ্য করে পার্শ্ববর্তী জেলা পরিষদের মার্কেট থেকে ইট-পাটকেল ছোঁড়া হয়। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। এতে আসিফ মাহমুদের পক্ষের অন্তত ১০ থেকে ১২ জন সমর্থক আহত হন। তবে তাদের দাবি, অন্তত ৫০ জন সাধারণ মানুষ আহত হয়েছেন। এ ছাড়া হামলায় পাঁচ সংবাদকর্মী আহতের খবর পাওয়া গেছে।
মিছিল নিয়ে আসা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মিনাজুল হক বলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিএনপির লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। মিছিল নিয়ে আসার পর শত শত ইটপাটকেল ছুড়ে আমাদের ধাওয়া দিতে থাকে।
তবে বিএনপি নেতাকর্মীরা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বিএনপির মুরাদনগর উপজেলার আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন বলেছেন, তারা হামলা করার পর আমাদের ছেলেরা প্রতিরোধ করেছে।
কুমিল্লার মুরাদনগর থানার তদন্ত কর্মকর্তা আমিন কাদের খান জানান, আজ মুরাদনগর সদরে এনসিপির সমর্থকদের একটি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ চলছিল। এ সময় পাশে অবস্থান করা কিছু লোক বিনে উসকানিতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। এরপরে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।
তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাজ করে। তবে এনসিপির সমর্থকদের অর্ধ শতাধিক আহতের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। এ হামলার ইন্ধনদাতাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মুরাদনগর উপজেলার সাবেক আহ্বায়ক ওবায়দুল হকের অভিযোগ, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া উপদেষ্টা হবার পর থেকে তার বিরুদ্ধে বিএনপি নেতা কায়কোবাদের লোকজন অপপ্রচার ও প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছেন। মুরাদনগরের যেকোনো ঘটনার তারা আসিফ মাহমুদের ওপর চালিয়ে দেয়।
এই প্রোপাগান্ডার বিরুদ্ধে আমরা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ‘সর্বস্তরের মুরাদনগরবাসী’ ব্যানারে একটি প্রতিবাদ মিছিল শুরু করি। এর মধ্যে তারা আমাদের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এতে অন্তত ৫০ জন সাধারণ মানুষ আহত হয়েছেন। পুলিশ আমাদের নিরাপত্তা দিতে পারেনি।
পাল্টা অভিযোগ করে মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন বলেন, “ছাত্রদলের শান্তিপূর্ণ প্রোগ্রাম ছিল। তিন দিন আগে জানিয়ে দিয়েছিলাম। আমরা যেখানেই প্রোগ্রাম দেই আসিফ মাহমুদের লোকজন কাউন্টার প্রোগ্রাম দেন।
“আমাদের দাবি ছিল, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হওয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। ছেলেরা তখনও মিছিল শুরু করে নাই, তারা দলীয় কার্যালয়ে বসেছিল। আসিফ মাহমুদের লোকজন যেদিকে মিছিল করছিল, সেখান থেকেই ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। তারা নানা কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে মিছিল শুরু করে।”
তদন্ত কর্মকর্তা আমিন কাদের খান বলেন, “বিকালে এনসিপির (আসিফ মাহমুদের সমর্থক) সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ চলছিল। এ সময় পাশে অবস্থান করা কিছু লোক বিনা উস্কানিতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন।
“এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।”