।।বিকে আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
প্রশান্ত মহাসাগরে শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপে অবস্থিত ক্ল্যুচেভস্কয় আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছে। বিশ্বের অন্যতম উচ্চতম ও সক্রিয় এই আগ্নেয়গিরির ঢাল বেয়ে নেমে আসছে জ্বলন্ত লাভা।
বুধবার ৩০ জুলাই প্রশান্ত মহাসাগরে ৮.৮ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পের পরপরই এই অগ্ন্যুৎপাত ঘটে।
রাশিয়ান অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সের ইউনাইটেড জিওফিজিক্যাল সার্ভিস একটি টেলিগ্রাম বার্তায় জানিয়েছে, প্রশান্ত মহাসাগরে সংঘটিত শক্তিশালী ৮.৮ মাত্রার ভূমিকম্পের পরপরই আগ্নেয়গিরিটি সক্রিয় হয়ে ওঠে।
ক্ল্যুচেভস্কয় আগ্নেয়গিরিটি পেত্রোপাভলোভস্ক-কামচাতস্কি শহর থেকে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। এটি পূর্ব রাশিয়ার এক বিস্তীর্ণ আগ্নেয়গিরি অঞ্চলের অংশ। এর উচ্চতা প্রায় ৪,৮৩৫ মিটার (১৫,৮৩৩ ফুট)। এটি ইউরেশিয়া মহাদেশের সর্বোচ্চ সক্রিয় আগ্নেয়গিরি এবং প্রশান্ত মহাসাগরের ‘রিং অব ফায়ার’ অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। এর আগেও সেখানে একাধিকবার অগ্ন্যুৎপাত ঘটেছে।
রুশ বিজ্ঞান একাডেমির ইউনাইটেড জিওফিজিক্যাল সার্ভিস জানিয়েছে, আগ্নেয়গিরির পশ্চিম ঢাল দিয়ে লাভা বয়ে যাচ্ছে। আগ্নেয়গিরির শীর্ষে বিস্ফোরণ ও তীব্র আলোর ঝলকও দেখা গেছে।
তবে ভূমিকম্পের সঙ্গে এমন প্রত্যক্ষ সংযোগ বিরল ঘটনা বলে জানিয়েছেন ভূতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞরা। এর পরেই ওই অগ্ন্যুৎপাতের ছবি ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ইতিহাস বলছে, ২০১৩ ও ২০২০ সালে এই আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত কয়েক কিলোমিটার উচ্চতায় ছাইয়ের স্তম্ভ সৃষ্টি করেছিল, যা বিমান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটায়। এটি মূলত জমে থাকা লাভা, ছাই ও অন্যান্য উপাদান দিয়ে গঠিত। বিপজ্জনক হলেও রুশ ভূতত্ত্ববিদ ও অভিযাত্রীরা দীর্ঘদিন ধরে এটিকে ঘিরে গবেষণা করে আসছেন। জনবসতি খুব সীমিত হলেও আশপাশের অঞ্চল সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হয়।
আজকের ভূমিকম্পে কামচাটকা অঞ্চলের বেশ কিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন, তবে এখনো কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। ভূমিকম্পের পর কামচাটকা উপকূলে ৩ থেকে ৪ মিটার উচ্চতার সুনামি ঢেউ রেকর্ড করা হয়। সৌভাগ্যক্রমে, সময়মতো সরে যাওয়ায় উপকূলবর্তী লোকজন বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন