(১)প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রূীরা নির্বাচিত উত্তরাধিকারী দায়িত্বভার
গ্রহন না করা পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল আছেন ও খাকবেন
(২)অসাংবিধানিক পন্হা ও কাঠামোর(উপদেস্টা) মাধ্যমে
রাস্ট্র সংস্কার সম্ভব নয়-অতীতেও কখনো সম্ভব হয়নি
-ম,ম,বাসেত
।। মো:মাহবুবুল বাসেত ।।
প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে থাকলেও-সংসদ ভেঙ্গে দেয়া হলেও
সংবিধানের ৫৭ ও ৫৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নতুন নির্বাচিত
সরকার না আসা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীরা
স্বপদে বহাল আছেন ও থাকবেন।
পলিটিশিয়ান ও সাংবাদিকদের ভাষায়-
এটাকেই বলে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার বা
নির্বাচনকালীন সরকার।আগের স্বাভাবিক
নির্বাচিত সরকার ছাড়া সারা পৃথিবীতে
এই সরকারের আর কোন
আইনগত/সাংবিধানিক/রাজনৈতিক
ভাষা বা পরিভাষা বা নাম নেই।
এই সরকারের মন্ত্রীসভার আকার
ছোট হতে পারে এবং মন্ত্রূীরা সংসদ সদস্যদের
মধ্য থেকেই মনোনীত হবেন(১০% টেকনোত্রেুট বা সংসদ
সদস্য নন-এমন ব্যক্তিদের মধ্য থেকে নেয়া যাবে-এবং এ সংখ্যা
বাড়ানোর সুযোগ আমার জানা আছে)।
এই সাংবিধানিক বিধান সুস্পস্ট ও বোধগম্য এবং
বাংলায় লিখিত।
এই ব্যাপারে সুপ্রীম কোর্টের কাছে সুপারিশ/উপদেশ
চাওয়ার কোন সুযোগ নেই এবং সুপ্রীমকোর্টেরও
এই ব্যাপারে সুপারিশ করার. উপদেশ /মতামত দেয়ার
কোন সুযোগ নেই-কারন সাংবিধানিক বিষয়টি
একেবারেই পরিস্কার ও স্বচ্চ এবং কোন
অস্পস্টতা নেই এখানে এবং এটা রাস্ট্রপতিরও
বুজতে না পারার কোন কারন নেই।
এই বিধানের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কেউ কোন কিছু করলে / ঘটালে
তা হবে গায়ের জোরের বা অস্ত্রের জোরের কাজ/অসাংবিধানিক
পন্হার কাজ। এই কাজের জন্যে/সহযোগিতার জন্যে/সমর্থনের জন্যে
সংবিধানের ৭(ক) ও ৭(খ)
অনুচ্ছেদের আলোকে চান্স পেলে জড়িত যে কোন দল/সরকার/ব্যক্তির
বিরুদ্ধে আইনগত প্রত্রিুয়ায় সবার
গর্দান নেয়ার সুযোগ থাকবে।
মন্তব্য;
ওপরের এই সাংবিধানিক মতামত বা ব্যাখ্যা বেদবাক্যের মত
সঠিক ও যথার্ত।এই ক্ষেত্রে “অমুক-তমুক ভার্সিটির আইনের
শিক্ষক বা অমুক সংবিধানের রচয়িতা বা কপিরাইটার/দলিল লেখক-
এই সব কোন যুক্তিই কাজে আসবেনা।
(১)সংবিধানের অনুচ্ছেদ-৫৭-:
চতুর্থ ভাগ
নির্বাহী বিভাগ
২য় পরিচ্ছেদ
**প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা:
প্রধানমন্ত্রীর পদের মেয়াদ৫৭। (১) প্রধানমন্ত্রীর পদ শূন্য হইবে, যদি-
(ক) তিনি কোন সময়ে রাষ্ট্রপতির নিকট পদত্যাগপত্র প্রদান করেন; অথবা
(খ) তিনি সংসদ-সদস্য না থাকেন।২) সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থন হারাইলে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করিবেন কিংবা সংসদ ভাংগিয়া দিবার জন্য লিখিতভাবে রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শদান করিবেন এবং তিনি অনুরূপ পরামর্শদান করিলে রাষ্ট্রপতি, অন্য কোন সংসদ-সদস্য সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থাভাজন নহেন এই মর্মে সন্তুষ্ট হইলে, সংসদ ভাংগিয়া দিবেন।
***(৩) প্রধানমন্ত্রীর উত্তরাধিকারী কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীকে স্বীয় পদে বহাল থাকিতে এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই অযোগ্য করিবে না।***
( একদম পানির মত স্বচ্ছ-রাস্ট্রপতির না বুজার কি আছে?এটা বুজার জন্যে রাস্ট্রপতিকে সুপ্রিমকোর্টের পরামর্শ নিতে হবে কেন?বা সুপ্রীমকোর্টও উপদেশ বা পরামর্শ দেবে কেন?অস্পস্টতা কোথায়?)
(২)সংবিধানের অনুচ্ছেদ-৫৮:
চতুর্থ ভাগ
নির্বাহী বিভাগ
২য় পরিচ্ছেদ
প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা
অন্যান্য মন্ত্রীর পদের মেয়াদ
৫৮। (১) প্রধানমন্ত্রী ব্যতীত অন্য কোন মন্ত্রীর পদ শূন্য হইবে, যদি-
(ক) তিনি রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করিবার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট পদত্যাগপত্র প্রদান করেন;
(খ) তিনি সংসদ-সদস্য না থাকেন, তবে ৫৬ অনুচ্ছেদের (২) দফার শর্তাংশের অধীনে মনোনীত মন্ত্রীর ক্ষেত্রে ইহা প্রযোজ্য হইবে না;
(গ) এই অনুচ্ছেদের (২) দফা অনুসারে রাষ্ট্রপতি অনুরূপ নির্দেশ দান করেন; অথবা
(ঘ) এই অনুচ্ছেদের (৪) দফায় যেরূপ বিধান করা হইয়াছে তাহা কার্যকর হয়।
(২) প্রধানমন্ত্রী যে-কোন সময়ে কোন মন্ত্রীকে পদত্যাগ করিতে অনুরোধ করিতে পারিবেন এবং উক্ত মন্ত্রী অনুরূপ অনুরোধ পালনে অসমর্থ হইলে তিনি রাষ্ট্রপতিকে উক্ত মন্ত্রীর নিয়োগের অবসান ঘটাইবার পরামর্শ দান করিতে পারিবেন।
***(৩) সংসদ ভাংগিয়া যাওয়া অবস্থায় যে-কোন সময়ে কোন মন্ত্রীকে স্বীয় পদে বহাল থাকিতে এই অনুচ্ছেদের (১) দফার (ক), (খ) ও (ঘ) উপ-দফার কোন কিছুই অযোগ্য করিবে না।***
( একদম পানির মত স্বচ্ছ-রাস্ট্রপতির না বুজার কি আছে? এটা বুজার জন্যে তাকে সুপ্রীমকোর্টের উপদেশ বা পরামর্শ নিতে হবে কেন?উপদেস্টা শব্দটা আছে সংবিধানের কোথাও? বা এখানে?)
***(৪) প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করিলে বা স্বীয় পদে বহাল না থাকিলে মন্ত্রীদের প্রত্যেকে পদত্যাগ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে; তবে এই পরিচ্ছেদের বিধানাবলী-সাপেক্ষে তাঁহাদের উত্তরাধিকারীগণ( *নির্বাচিত)কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত তাঁহারা স্ব স্ব পদে বহাল থাকিবেন।
( একদম পানির মত স্বচ্ছ-উপদেস্টা নিযোগ বা উপদেস্টা পরিষদ গঠনের কোন সুযোগইতো নেই সংবিধান অনুযায়ী-জাতির সাথে প্রতারনারওতো একটা সীমা আছে)
(৫) এই অনুচ্ছেদে "মন্ত্রী" বলিতে প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রী অন্তর্ভুক্ত।
(৩)সংবিধানের অনুচ্ছেদ.-৭(ক)
প্রথম ভাগ
প্রজাতন্ত্র
”সংবিধান বাতিল, স্থগিতকরণ, ইত্যাদি অপরাধ
৭ক। (১) কোন ব্যক্তি শক্তি প্রদর্শন বা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বা অন্য কোন অসাংবিধানিক পন্থায় -
(ক) এই সংবিধান বা ইহার কোন অনুচ্ছেদ রদ, রহিত বা বাতিল বা স্থগিত করিলে কিংবা উহা করিবার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করিলে ; কিংবা
(খ) এই সংবিধান বা ইহার কোন বিধানের প্রতি নাগরিকের আস্থা, বিশ্বাস বা প্রত্যয় পরাহত করিলে কিংবা উহা করিবার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করিলে-
তাহার এই কার্য রাষ্ট্রদ্রোহিতা হইবে এবং ঐ ব্যক্তি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে দোষী হইবে।
(২) কোন ব্যক্তি (১) দফায় বর্ণিত-
(ক) কোন কার্য করিতে সহযোগিতা বা উস্কানি প্রদান করিলে; কিংবা
(খ) কার্য অনুমোদন, মার্জনা, সমর্থন বা অনুসমর্থন করিলে-
তাহার এইরূপ কার্যও একই অপরাধ হইবে।
(৩) এই অনুচ্ছেদে বর্ণিত অপরাধে দোষী ব্যক্তি প্রচলিত আইনে অন্যান্য অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ দণ্ডে দণ্ডিত হইবে।
**সংবিধানের মৌলিক বিধানাবলীতে হাত দেয়ার/সংশোধনের
ক্ষমতা প্রেসিডেন্টতো দুরের কথা সংসদেরও নেই।
ভালভাবে দেখুন:
সংবিধানের অনুচ্ছেদ-৭(খ):
”প্রথম ভাগ
প্রজাতন্ত্র
”(৭(খ)।সংবিধানের মৌলিক বিধানাবলী সংশোধন অযোগ্য:
৭খ।সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সংবিধানের প্রস্তাবনা, প্রথম ভাগের সকল অনুচ্ছেদ, দ্বিতীয় ভাগের সকল অনুচ্ছেদ, নবম-ক ভাগে বর্ণিত অনুচ্ছেদসমূহের বিধানাবলী সাপেক্ষে তৃতীয় ভাগের সকল অনুচ্ছেদ এবং একাদশ ভাগের ১৫০ অনুচ্ছেদসহ সংবিধানের অন্যান্য মৌলিক কাঠামো সংক্রান্ত অনুচ্ছেদসমুহের বিধানাবলী সংযোজন, পরিবর্তন, প্রতিস্থাপন, রহিতকরণ কিংবা অন্য কোন পন্থায় সংশোধনের অযোগ্য হইবে।”
(সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪নং আইন)-এর ৭ ধারাবলে ৭ক এবং ৭খ অনুচ্ছেদ সন্নিবেশিত)।
পর্যালোচনা ও সুপারিশ:
অতএব.রাস্ট্র বা সরকারের কোন পদ্ধতিতে সংস্কার আনতে হলে তা আইনগত ও সাংবিধানিক প্রত্রিুয়ায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ঐকমত্যের/সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই সাংবিধানিক কাঠামোর আওতায় করতে হবে-বিকল্প কোন সুযোগ সভ্য/গনতান্ত্রিক দেশে নেই।কোন আন্দোলন / বিক্ষোভ/গন অভ্যূথ্থানের মাধ্যমেও তা সম্ভব নয়-সরকারের পদত্যাগ বা পতন ঘটানো সম্ভব।
৯৬ সালে বেগম জিয়ার সরকারকে ( প্রায় একমাস স্হায়ী)গন অভ্যুথ্থান/আন্দোলনের মাধ্যমে অসাংবিধানিক দাবী বা রাস্ট্র বা সরকার মেরামত তথা ”কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্হা” প্রবর্তনের জন্যে মাত্র ৪ কার্য দিবস স্হায়ী সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্হা করতে হয়েছিল এবং কেয়ারটেকার সরকারের বিধান সংবিধানে যুক্ত করে বেগম জিয়া পদত্যাগ করে বাসায় যেতে বাধ্য হয়েছিলেন।তিনি কি উপদেস্টা পরিষদ গঠন করে এই সংস্কার করেছিলেন? উত্তর -না।
বেগম জিয়ার সে বিএনপি এখন আবার অসাংবিধানিক প্রত্রিুয়ায় রাস্ট্র বা সরকার পরিচালনার পদ্ধতি সংস্কার করতে চান কি করে?।আওয়ামীলীগ,জামায়াত বা জাতীয় পার্টিও তা চাইবে কিভাবে?তারাওতো তখন সারা দেশে জ্বালাও পোড়াও করে বেগম জিয়াকে দাবী মানার পরও ক্ষমতা থেকে টেনে হেচড়ে নামিয়েছিলেন( তিনি সেননিবাসের বাসায় থাকায় সেখানে গিয়ে হামলা চালাতে পারেনি তখনকার ছাত্র হ-জনতা)।জামায়াত-বিএনপি আজ কোন মুখে অসাংবিধানিক প্রত্রিুয়ায় রাস্ট্র সংস্কারের দাবী তুলছে?তারা সব দল এক সাথে বসে কেন সাংবিধানিক প্রত্রিুয়ায় রাস্ট্র সংস্কারের প্রস্তাব তৈরী করতে পারছে না?ড.ইউনুসের দরকার কি?
( এটি একটি একাডেমিক আলোচনা। কাউকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনা /রাখা/সরানোর জন্যে এই লেখা নয়। এই লেখার মুল উদ্দেশ্য-সাংবিধানিক প্রত্রিুয়ায়ও বিদ্যমান প্রধানমন্ত্রীকে ”রেখে বা না রেখেওযে” সংকট নিরসন সম্ভব-তা তুলে ধরা।প্রধানমন্ত্রী যদি পদত্যাগ করে থাকেন তাহলে তাকে দেশত্যাগ বা মৃত্যুবরনের সুযোগ দেয়া যাবেনা। আর দেশত্যাগ করে থাকলে অবিলম্বে তাকে ফিরিয়ে আনতে হবে এবং সংকট নিরসনের আগ পর্যন্ত তাকে যেভাবেই হোক বাঁচিয়ে রাখতে হবে। আর তিনি ইন্তেকাল করলেও সাংবিধানিক প্রত্রিূয়াতেই সংকট নিরসন সম্ভব। এই লেখার সাথে দ্বিমত পোষনকারীরা গঠনমুলক মতামত দিলে কৃতজ্ঘ থ্কবো।)
লেখক পরিচিতি:
*সিনিয়র সাংবাদিক এবং সংসদ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ হিসাবে পরিচিত
*https://bangalirkhobor.com/home/bkteam