National Online News Portal of Bangladesh - বাংলাদেশের জাতীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল - بوابة الأخبار الوطنية على الإنترنت لبنغلاديش - बांग्लादेश का राष्ट्रीय ऑनलाइन समाचार पोर्टल - بنگلہ دیش کا قومی آن لائن نیوز پورٹل
ছবি: সংগৃহিত

যেকোনো সময় দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হতে পারে : জিএম কাদের

  ।।বিকে রিপোর্ট।।  মঙ্গলবার | ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪ | ০৮:৩৫ পিএম

দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দিয়ে সংঘাতময় পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। তিনি বলেন, যেকোনো সময় স্থিতিশীলতা ভেঙে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হতে পারে।

সোমবার ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে দলটির সাংস্কৃতিক পার্টির আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

জিএম কাদের বলেন, আমরা অনেক দিন ধরে লক্ষ করছি সারা দেশের মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হচ্ছে। একটি ভাগকে বলা হচ্ছে দেশপ্রেমিক, আরেকটি ভাগকে বলা হচ্ছে দেশদ্রোহী। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যারা বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হয়েছে তারা দেশ প্রেমিক। এদের সংখ্যা কম নয়, অর্ধেকের কাছাকাছি হতে পারে। বাকি যারা নির্যাতিত হননি, তারা দেশ প্রেমিক নন, আর যারা পুরস্কৃত হয়েছেন তারা দেশদ্রোহী।

তিনি বলেন, দেশ প্রেমিকদের ফ্রি হ্যান্ড লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে– যেকোনো ধরনের মিথ্যা মামলা, ব্যক্তিগতভাবে তাদের গালাগালি করা, বাড়িঘরে আক্রমণ ‍ও লুটতরাজ করা, তাদের (যারা নির্যাতিত হননি) সহায়-সম্পত্তি দখল করা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করা, মিল ফ্যাক্টরিতে আগুন দেওয়া, পার্টি অফিসে আগুন দেওয়া, তাদের কোনোরকম কাজ করতে না দেওয়া।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, উপদেষ্টাদের মধ্যে অনেককে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি, তাদের অনেকে সৎ, দেশের জন্য কাজ করছেন। কিন্তু একটি অদৃশ্য শক্তি তাদের কাজের মধ্যে থাকছে। মনে হচ্ছে তারা একরকম কাজ করছেন, হচ্ছে আরেক রকম।

জিএম কাদের বলেন, পুলিশ, প্রশাসন এবং জুডিশিয়ারি তারা যেসব কাজ করছে, তা মনে হচ্ছে বাধ্য হয়ে করছে। কাজেই দেশকে শুধু দু’ভাগে ভাগ করা হয়নি, এক ভাগকে আরেক ভাগের ওপর লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংঘাত পূর্ণ আবহাওয়া সৃষ্টি করা হয়েছে। সংঘাতময় আবহাওয়ায় অর্ধেক লোক এক পাশে আরেক ভাগ অপর পাশে।

এই বিভাজন আপনি যদি ধরে রাখতে চান আপনি ধরে রাখেন। এটা দুই-চার দিন-দশ দিন এক বছর। এটাতে দেশে কখনোই স্থিতিময় পরিবেশ আসবে না। যেকোনো সময় স্থিতিশীলতা ভেঙে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হতে পারে।

তিনি বলেন, প্রতিহিংসা আমাদের শেষ করতে হবে, অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে শেষ করবেন আর বাকি অর্ধেক নিয়ে দেশ চালাবেন এটা কি সম্ভব হবে? যারা এই দিবা স্বপ্ন দেখছেন তাদের আমি বলব সামনের দিকে তাকিয়ে দেখুন কোথায় কি হয়। আমাদের রাজনীতি করতে দিতে হবে, সমস্ত মামলা প্রত্যাহার করে দিন, সমস্ত বিষয়াবলী প্রেসে আসতে দিন।

আগামী নির্বাচনে লেভেল ফিল্ড তৈরি হবে বলে মনে হচ্ছে না দাবি করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে গেছি, কাল বক্তব্য শুনে মনে হলো আপনারা সংস্কার করতে পারছেন না। সংস্কার করতে গেলে এটা পার্লামেন্টে করতে হবে এবং পার্লামেন্টে সব দলের সহযোগিতা ছাড়া এটাকে পাস করানো সম্ভব হবে না।

জি এম কাদের বলেন, আপনার কাজ হলো- নির্বাচন হবে, আপনি একটা এজেন্ডা দিবেন; নির্বাচনে মেনিফেস্টো হিসেবে যদি আপনাদের জনগণ ভোট দেয়- সংবিধান চেইঞ্জ করবেন।

আন্দোলন করে, করতে চাইলেও আগে থেকে জনগণকে জানাতে হবে যে আমরা ইসলামী শাসন ব্যবস্থার জন্য আন্দোলন করছি। তাদেরকে অন্ধকারে রেখে এটা করা সমীচীন নয়।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রায়োরিটি ছিল- অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন; একটি শাসন ব্যবস্থা, যেখানে কোনো একনায়কতন্ত্র থাকবে না। এটাই ছিল প্রায়োরিটি এবং বর্তমান সরকার এই প্রায়োরিটিটা মেনে নিয়েছিলেন এবং ডিক্লেয়ার দিয়েছিলেন- এভাবে কর্মসূচি শুরু করেছিলেন।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, এটাতে (রাষ্ট্রের) যেকোনো বড় ধরনের সংস্কারে জন্য দরকার জাতীয় ঐক্য। জাতিকে বিভাজিত করে আপনি কোনো বড় কাজ করতে পারবেন না। তারা এটাকেও একটা টার্গেট দিয়েছিল। কিন্তু আমরা দেখলাম তাদের টার্গেট এবং বাস্তব ফিল্ডের অবস্থা একটু ভিন্ন।

তারা বলছেন, কিন্তু প্রায়োরিটি দিচ্ছেন ছাত্র-জনতা যারা নিহত হয়েছেন, তাদের বিচার এবং শাস্তি, প্রতিশোধ। আমি বলেছিলাম আপনারা বিচার করুন- ন্যায়বিচার, বিচারের নামে প্রহসন করবেন না। তাহলে কোনো লাভ হবে না।

জিএম কাদের বলেন, ২৪’ এর আন্দোলনের পর ছাত্র-জনতা কি চেয়েছিল? শেখ হাসিনার পতন এবং একটি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন। তার মাধ্যমে সরকার গঠন ও একটি শাসন ব্যবস্থা। যেখানে এক ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে যাতে দানব তৈরি করা না হয়, সেরকম একটি শাসন ব্যবস্থা। এটাই ছিল তাদের চাওয়া।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রদের মধ্যে অনেকেই বলেছেন, আমরা যুদ্ধ করেছি এটা মুসলমান দেশ, ইসলাম কায়েম করব। আমি বলতে চাই বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই মুসলমান। সেখানে ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসা আছে।

আমরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশি তারা কিন্তু ধর্মের ব্যাপারে অত্যন্ত সহানুভূতিশীল। ধর্মকর্ম পালনে তারা অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল, আন্তরিক কিন্তু একেবারে ধর্মীয় কাঠামোর মধ্যে জীবন চালানো, ইসলামী রুট হিসেবে চালানোর জন্য অনেকেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না।

তিনি বলেন, মার্ডার কেস পলিটিক্যাল বা যাই হোক- এগুলোর কোনো মেয়াদ থাকে না। তাড়াহুড়ার কিছু নাই। আজকে আপনি ক্ষমতায় আছেন মার্ডার কেসে ঢুকিয়ে রাখবেন- পাঁচ বছর পর, ১০ বছর পর, ১৫ বছর পর পরে হলেও এগুলো আসবেই এবং মামলা ফেইস করতে হবে।

“আপনারা যারা এই ঘটনার কথা বলছেন, এরপরে মার্ডার, আগের মার্ডার- এগুলোর বিচার হবেই। এগুলো নিয়ে তাড়াহুড়া করার কিছু নেই, দরকার নাই।

জিএম কাদের বলেন, এই হত্যাকাণ্ডকে ব্যবহার করে, এই শহীদদের আত্মত্যাগকে সামনে রেখে যেটা করা হচ্ছে- মিথ্যা মামলা দিয়ে লাখ লাখ মানুষকে, জেনে-শুনে মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে লাখ লাখ মানুষকে এবং তারপরে এটা নিয়ে দুর্নীতি হচ্ছে। এটা নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিশোধ, ব্যক্তিগত প্রতিশোধ, সামাজিক, রাজনৈতিক- যেকোনো প্রতিশোধের জন্য এই মামলাগুলোকে ব্যবহার করা হচ্ছে।

শহীদের আত্মত্যাগ- তারা যেটির উপর ভিত্তি করে করেছে, সেটার উপর গুরুত্ব দেওয়া। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি যেকোনোভাবে জাতীয় ঐক্যকে বিঘ্নিত করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, “আমরা দাবি করছি- আমরা নির্বাচন চাই। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনে পরিবেশ ছাড়া দেশে শান্তি আসবে না। দেশে যে হিংসার পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে, যে হানাহানির পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে; সেই পরিবেশ সামনের দিকে দেশকে একটা বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

“যারা এটা বোঝেন- তারা যা মনে করার করেন, আমাকে পাগল মনেও করতে পারেন; কিন্তু আমি যেটা বলেছি, দেশটা সামনে সেদিকেই যেতে পারে।” বিপর্যয়ের

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আমরা দাবি করছি, নির্বাচন চাই। অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ ছাড়া দেশে শান্তি আসবে না। দেশে যে হিংসার পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে, সেই পরিবেশ সামনের দিকে দেশকে একটা বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে।