অনেক সাংবাদিক আমাকে প্রশ্ন করেন, আপনারা কত দিনে নির্বাচন চান? আমি উত্তরে বলেছি, আমরা ১৭ বছর অপেক্ষা করেছি। অন্যায়-দুর্নীতি সংস্কারের পর আমরা নির্বাচন চাই। তবে বর্তমান সরকার যেন সংস্কারের জন্য একটি সেকেন্ডও বেশি সময় ব্যয় না করে। আমরা ক্ষমতার জন্য অস্থির নই- বলেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
শুক্রবার ২০ ডিসেম্বর সকালে কেরানীগঞ্জে জামায়াতের ঢাকা জেলার কর্মী সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলেও তার ষড়যন্ত্র এখনও শেষ হয়নি। তিনি বাংলাদেশের প্রতিটি সেক্টরে বসিয়ে রাখা দোসরদের কাজে লাগিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছেন। স্বৈরাচারী হাসিনার ষড়যন্ত্র রুখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিগত সাড়ে ১৫ বছর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলের ওপর যে রকম জুলুম করা হয়েছে বাংলাদেশের অন্য কোনো দলের ওপর সে জুলুম করা হয়নি। কিন্তু আমরা আগেই বলেছি, আল্লাহ আমাদের ক্ষমতায় নিলে আমরা কারও ওপর প্রতিশোধ নেব না। আমরা বৈষম্যহীন ও শোষণমুক্ত একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জোর করে ক্ষমতায় আসেনি উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, দেশবাসী তাদেরকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। বর্তমান সরকার আওয়ামী লীগ সরকারের দ্রব্যমূল্যের সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি। এটা বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা। তবে চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেট ঠেকাতে আমাদের সাহায্য সহযোগিতা চাইলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের পক্ষ থেকে আমরা সরকারকে সর্বাত্মক সাহস সহযোগিতা করব।
নৈতিক সাহস না থাকায় পতিত সরকার দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল দাবি করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা ছাড়ার দিন পর্যন্ত দেশবাসীকে হত্যা করেছে। স্বৈরাচারী সরকারের পতন হলেও দেশ এখনো স্বাধীন হয়নি। স্বৈরাচারী সরকার আমাদের শত শত ভাই-বোনকে খুন করেছে।
তিনি বলেন, মঈন উদ্দিন-ফখরুদ্দিন এ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। যারা বলেছেন বাংলাদেশ রোল মডেল-তারা আজ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে কেন। আমরা শান্তি চাই, দেশের মানুষকে শান্তিতে রাখতে চাই। আমরা লুট ও দখলের রাজনীতি করতে চাই না। আল্লাহ তায়ালা যদি আমাদের ক্ষমতায় আনে আমরা ইসলামী ও কোরআনের আলোকে দেশ চালাব।
কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে চাই। এই কাজ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী-রুকনরা একা করতে পারবে না। এ জন্য দরকার জনগণের ঐক্যবদ্ধ সহযোগিতা।
ঢাকা জেলা জামায়াত ইসলামীর আমির মাওলানা মো. দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ অঞ্চলের জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও পরিচালক সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বক্তব্য দেন।