ধর্মের ভিত্তিতে জাতিকে বিভাজন ও সংখ্যালঘু ধারণায় আমরা বিশ্বাসী নই। ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজিত বা সংখ্যালঘু কনসেপ্টে বিশ্বাসী নই বরং আমরা সবাই বাংলাদেশের গর্বিত নাগরিক। সবাই মিলে দেশকে কল্যাণের রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য জামায়াতে ইসলামী কাজ করে যাচ্ছে। জামায়াতের এ সংগ্রামে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ সব ধর্মের মানুষের সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন- বলেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
শুক্রবার ২০ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর মিরপুর সেনপাড়া খ্রীষ্টান চার্চে ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াত আয়োজিত খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সাথে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াত সংখ্যালঘু কনসেপ্টে বিশ্বাসী নয় জানিয়ে দলটির আমীর বলেছেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য সাধারণ দেশ; ফুলের বাগান। মাঝে মাঝে কিছু হুতুমপেঁচা আমাদের ফুলের বাগানে ঢুকে সবকিছু এলোমেলো করে দেয়ার অপচেষ্টা করে। এরা কোন ধর্মের নয় বরং এরা অপশক্তি।
তাই এদের সম্পর্কে ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র নির্বিশেষে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছোট একটি রাষ্ট্র। এদেশে ১৮ কোটি মানুষের বসবাস। দেশে নানা ধর্ম ও গোত্রের মানুষের বসবাস হলেও মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান প্রধানতম ধর্ম। সকলের সাথে মিলেমিশে চলা আমাদের ঐতিহাসিক ঐতিহ্য। আমরা ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজিত বা সংখ্যালঘু কনসেপ্টে বিশ্বাসী নই বরং আমরা সকলেই বাংলাদেশের গর্বিত নাগরিক।
জামায়াতের লোকেরা চুরি, ডাকাতি, খুন, ধর্ষণ, রাহাজানী, দুর্নীতি, লুটপাট সহ কোন ধরনের অপরাধের সাথে জড়িত নন। তারপরও আমরা মানুষ। আমাদের কোন মানবীয় ভুল ধরিয়ে দিলে আমরা তা সংশোধনের ক্ষেত্রে কোন ভাবেই হীনমন্য নই। আমরা দেশের সকল নাগরিকের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সব সময়ই আপোষহীন। তিনি একটি মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সকল শ্রেণির মানুষের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
জামায়াত আমির বলেন, সৃষ্টি এক, স্রষ্টাও এক ও অদ্বিতীয়। আকাশ থেকে বৃষ্টি হলে যেমন সব ধর্মের মানুষ সমানভাবে উপকৃত হই। তেমনি আবার কোনো বিপর্যয় হলেও সবাই সেই ক্ষতির সম্মুখিন হই। ধর্মীয় সংখ্যালঘু আখ্যা দিয়ে শ্রেণি বিশেষ মানুষের ওপর জুলুম করার অপচেষ্টা চালায়। জামায়াতে ইসলামী এ ধরনের সংকীর্ণতার সম্পূর্ণ ঊর্ধ্বে।
মূলত, দুই শ্রেণির মানুষের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা বেশি। একটি হলো সবচেয়ে উচ্চ শ্রেণি। এরা কলমের খোঁচায় মানুষের অধিকার কেড়ে নেন। আর অপর শ্রেণি হচ্ছে বস্তি। এদের হাতেই মাদক ও অস্ত্র তুলে দিয়ে দেশকে অশান্ত করার চেষ্টা করা হয়। তাই এদের সম্পর্কে আমাদের শূন্য সহনশীলতা দেখাতে হবে। তিনি গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
মিরপুর ব্যাপটিস্ট চার্চের জেষ্ট পালক-রেভারেন্ড মার্টিন অধিকারীর সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, মিরপুর ব্যাপটিস্ট চার্চের সাধারন সম্পাদক বাবুল কুমার সাহা, মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চের পালক রেভারেন্ড প্রিন্স কিরণ বাইন, সহ সম্পাদক মনোজ বাড়ৈ, কোষাধ্যক্ষ অসিত মিত্র, ব্যাপ্টিস্ট চার্চ মহিলা কমিটির সভানেত্রী প্রভাতি ফলিয়া, সম্পাদক অনিমা বাড়ৈ।