একুশে পদকপ্রাপ্ত রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার আর নেই।
বৃহস্পতিবার ১২ ডিসেম্বর সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
শিল্পীর স্বামী সারওয়ার আলম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরও জানান, প্রয়াতের মরদেহ আজ বৃহস্পতিবার বারডেমের হিমঘরে রাখা হবে। কাল জুমার নামাজের পর জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
উল্লেখ্য, বেশ কয়েক বছর ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন পাপিয়া সারোয়ার। গত পাঁচ দিন ধরে ঢাকার তেজগাঁওয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। এর আগে তিনি রাজধানীর আরও একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
পাপিয়া সারওয়ারের দুই মেয়ে জারা ও জিশান যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় বসবাস করেন। মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে দুই মেয়েই বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
পাপিয়া সারওয়ারের জন্ম বরিশালে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগে স্নাতক শেষ করেন। উচ্চ শিক্ষার জন্য বৃত্তি নিয়ে ভারতে যান। শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্র সংগীতে ডিগ্রি অর্জন করে পড়াশোনা শেষ করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীন হওয়ার পর ভারত সরকারের কাছ থেকে বৃত্তি পাওয়া প্রথম ব্যক্তি ছিলেন পাপিয়া সারোয়ার।
এর আগে ১৯৬৬ সালে ছায়ানটে ওয়াহিদুল হক, সন্জীদা খাতুন ও জাহেদুর রহিমের কাছে এবং পরে বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে সংগীতে দীক্ষা নেন পাপিয়া। তার সংগীত গুরু ছিলেন শিল্পী ওয়াহিদুল হক, সানজিদা খাতুন, এবং জাহেদুর রহিম।
১৯৯৬ সালে পাপিয়া সারোয়ার ‘গীতসুধা’ নামে একটি সংগীত দল প্রতিষ্ঠা করেন।
দীর্ঘ সংগীত ক্যারিয়ারে রবীন্দ্র সংগীতের জন্য কোটি শ্রোতার ভালোবাসা তিনি পেয়েছেন। আধুনিক গানেও আছে তার সাফল্য। ‘নাই টেলিফোন নাইরে পিয়ন নাইরে টেলিগ্রাম’ গানটি তাকে আপামর বাংলা গানের শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয়তা দিয়েছে।
পাপিয়া সারোয়ার ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি থেকে রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ লাভের পর ২০২১ সালে একুশে পদক পান এই সংগীত শিল্পী।