১৬৩তম রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থা আয়োজিত উৎসবের আজ ছিলে ২য় দিন। ‘বাজুক প্রাণে বজ্রভেরী/অকূল প্রাণের সে উৎসবে’ স্লোগানকে ধারণ করে শুরু হওয়া উৎসব চলবে আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত।
উৎসবের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার ১০ মে দ্বিতীয় অধিবেশন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দলীয় পরিবেশনায় অংশ নেয় সুরের ধারা, রবিরাগ, সংগীত ভবন, বাফা, বৈতালিক, সুরতীর্থ ও বিশ্ববীণার শিল্পীরা। কয়েক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে একই স্থানে তৃতীয় অধিবেশনের সূচনা হবে সংস্থার রীতি অনুযায়ী দুটি কোরাসের মধ্য দিয়ে।
এদিন সংস্থার শিল্পীরা পরপর পরিবেশন করবেন ‘ওই মহামানব আসে’ ও ‘বৈশাখ হে, মৌনী তাপস, কোন্ অতলের বাণী’।
তৃতীয় অধিবেশনের সূচনা হবে সংস্থার রীতি অনুযায়ী দুটি কোরাসের মধ্য দিয়ে।
এর আগে গতকাল রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের লবিতে বিকেল সাড়ে ৫টায় উদ্বোধনী নৃত্য পরিবেশনের মধ্য দিয়ে পর্দা ওঠে উৎসবের। ঢাকা ও ঢাকার বাইরের দেড় শতাধিক রবীন্দ্রসংগীত শিল্পীর অংশগ্রহণে শুরু হয় জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত উৎসব। শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালনায় নৃত্যানন্দের শিল্পীরা পরিবেশন করে বৃন্দ নৃত্য। নৃত্যের সঙ্গে সমবেত সংগীত ‘আকাশ–ভরা সূর্য–তারা’, ‘বিপুল তরঙ্গ রে’ পরিবেশন করেন সংস্থার শিল্পীরা। এরপর মূল অনুষ্ঠান শুরু হয় মিলনায়তনে।
উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিজন রামেন্দু মজুমদার। দুই গুণী শিল্পী কলিম শরাফী ও সাদি মহম্মদ সম্পর্কে আলোচনা করেন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সহসভাপতি মাহমুদ সেলিম ও লেখক-আলোকচিত্রী এম এ তাহের। স্বাগত কথনে অংশ নেন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও সংগীতশিল্পী পীযুষ বড়ুয়া। উৎসবের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন সংস্থার নির্বাহী সভাপতি আমিনা আহমেদ।
আয়োজকদের মতে, অতীতের সব আয়োজন ছাপিয়ে এবারের ৩৫তম আসর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, উৎসবের পুরোটাজুড়ে রয়েছেন দুই কিংবদন্তি। একজন হলেন কলিম শরাফী, অন্যজন সাদি মহম্মদ। উৎসবের মাধ্যমে উদ্যাপন করা হয় কলিম শরাফীর শততম জন্মবার্ষিকী।
তিন দিনব্যাপী উৎসবটি উৎসর্গ করা হয়েছে সদ্য প্রয়াত রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদের পুণ্যস্মৃতির উদ্দেশে। তাই উদ্বোধনী আয়োজনে ছিল তাঁরই অনুজ বাংলাদেশ সরকারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রথিতযশা নৃত্যশিল্পী শিবলী মহম্মদ ও শামীম আরা নীপার নেতৃত্বে ছিল নৃত্যাঞ্চলের শ্রদ্ধা নিবেদন।
তৃতীয় ও সমাপনী দিন আগামী শনিবার ১১ মে বিকেল পাঁচটায় সমাপনী আয়োজন শুরু হবে। থাকবে সংস্থার শিল্পীদের একক ও দলীয় পরিবেশনা। সমাপনী অধিবেশনের সূচনা হবে পরপর ‘জগত জুড়ে উদার সুরে আনন্দগান বাজে’ ও ‘আলোকের এই ঝর্নাধারায়’ গানের মধ্য দিয়ে। পরে নিয়মিত পর্বে অংশ নেবেন সংস্থার শিল্পীদের পাশাপাশি আমন্ত্রিত শিল্পীরা। তিন দিনের এই আয়োজন সবার জন্য উন্মুক্ত।
এবারের এ উৎসবের সঙ্গে মিশে রয়েছে বরেণ্য দুই রবীন্দ্রসংগীত শিল্পীর নাম। উৎসবটি উৎসর্গ করা হয়েছে অকাল প্রয়াত শিল্পী সাদি মহম্মদকে।