দুর্নীতি বিরোধী আর্ন্তজাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল অব বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান মনে করেন, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থের পুরোটাই পাচার নয়।
এখানে বিদেশে থাকা বাংলাদেশিদের বৈধ কিছু অর্থ থাকতে পারে। তবে এ অর্থের সিংহভাগই কালোটাকা। কারা এ অর্থ নিয়েছে, সরকারি বিভিন্ন সংস্থা উদ্যোগ নিলে সুইস ব্যাংক এ তথ্য দেবে।
কিন্তু সরকার উদ্যোগ নেয় না। কারণ এর সঙ্গে প্রভাবশালীরা জড়িত। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মিস ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে পাচার হয়। এরমধ্যে রয়েছে আমদানি পণ্যের মূল্য বেশি দেখানো এবং রপ্তানিতে কম দেখানো। তিনি বলেন, ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে টাকা পাচার ও তার শাস্তির ব্যাপারে পরিষ্কারভাবে বলা আছে।
কীভাবে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনতে হবে, সম্পদ বাজেয়াপ্ত এবং অপরাধীর শাস্তির কথা বলা আছে। তিনি বলেন, বর্তমান আইনে পাচারকৃত অর্থের দ্বিগুণ জরিমানার বিধান রয়েছে। একইভাবে এর সঙ্গে জড়িতদের ৪ থেকে ১২ বছর কারাদণ্ডের বিধান আছে। কিন্তু আইনের বাস্তবায়ন নেই। ফলে টাকা পাচার বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, অর্থপাচার রোধে সবার আগে রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি।
এরপর দক্ষতা, সক্ষমতা এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। তিনি বলেন, সবার আগে রাজনৈতিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, পাচার নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কারণ, যারা অর্থ পাচার করছে, তারা রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত প্রভাবশালী। এদের ক্ষমতা অনেক বেশি।
সব সময় তারা, ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। সরকারি সংস্থাগুলো এদের ধরতে সাহস পায় না। তাই তারা অর্থ পাচার করছে। এদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা জরুরি।
এক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করে পাচারকারীদের বার্তা দেওয়া উচিত। কিন্তু এ ধরনের বার্তা দেওয়া হচ্ছে না। আর যখন ইস্যুটি সামনে আসে, তখন চুনোপুঁটি কাউকে ধরা হয়। কিন্তু রাঘববোয়ালরা নিরাপদেই থাকে।