পার্লামেন্টে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইয়োলের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব পাস হয়েছে। নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে অভিশংসিতই হতে হলো দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইউলকে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফা অভিশংসন ভোটের মুখে পড়ছেন ইউন সুক।
শনিবার ১৪ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্টে ভোটাভুটিতে অভিশংসিত হয়েছেন ইউন সুক ইউল। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
৩০০ আসনের পার্লামেন্টের ১৯২ আসনেই ছিল ইউনের দল পিপলস পাওয়ার পার্টি। কিন্তু তারপরও অভিশংসন ঠেকাতে পারেননি। ২০৪ জন আইনপ্রণেতা তার অভিশংসনের পক্ষে রায় দিয়েছেন।
যদিও এর ফলে তাকে এখনই ক্ষমতা হারাতে হচ্ছে না। অভিশংসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে কয়েক সপ্তাহ সময় নেয়। পার্লামেন্টে পাস হওয়া অভিশংসন প্রস্তাব এখন চলে যাবে সরাসরি সাংবিধানিক আদালতে। তাতে আছেন ৯ জন সদস্য। যদি অভিশংসন প্রস্তাব বহাল রাখার পক্ষে তার মধ্যে ৬ জন মত বা ভোট দেন, তবেই প্রেসিডেন্ট তার ক্ষমতা হারাবেন। এবং প্রেসিডেন্ট যদি ক্ষমতা হারান তাহলে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে হবে ৬০ দিন বা দুই মাসের মধ্যে।
উল্লেখ্য এর আগে সামরিক শাসন জারি করার ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইয়োল। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, আর কখনো এমনটা করবেন না। জারি করবেন না সামরিক শাসন।
কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি করে ফেলেছেন তিনি। বিরোধীরা বলেছেন, সবকিছুর আগে তাকে পদত্যাগ করতে হবে।
প্রসংগত গত মঙ্গলবার রাতে তিনি আকস্মিকভাবে দেশে সামরিক শাসন জারির ঘোষণা দেন টেলিভিশনে। অভিযোগ করেন উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্টপন্থিদের এবং রাষ্ট্রবিরোধীদের অপসারণে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু পরে প্রকাশ হয় অন্যচিত্র। দেখা যায়, তিনি ফার্স্টলেডিকে রক্ষা করতে সেই ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে এমন ঘোষণা দিয়েছেন।
কিন্তু দেশের ভেতরে এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ হয় এর। পার্লামেন্টের ভেতর জরুরি অধিবেশনে বসেন এমপিরা। তারা সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাস করেন। ফলে প্রেসিডেন্ট তার নির্দেশ প্রত্যাহার করে নিতে হয় বাধ্য হন।
এরপর প্রেসিডেন্ট ইউনকে অভিশংসনের তৎপরতা শুরু করে বিরোধী জোট। পাঁচ বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত ইউনের মেয়াদ পূর্ণ হতে আরও দুই বছর বাকি ছিল।
এর আগে প্রথম দফায় ইউন সুক ইওলকে অভিশংসনে বিরোধী-নেতৃত্বাধীন একটি প্রস্তাব ব্যর্থ হয়। গত ৭ ডিসেম্বর অভিশংসনের জন্য পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হয়। সেই সময় ক্ষমতাসীন দলের এমপিরা তা বয়কট করায় প্রস্তাবটি বাতিল হয়ে গিয়েছিল।