ঢাকার বাতাসের মান আজ ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সেই সঙ্গে দূষণ মাত্রার দিক থেকে তালিকায় ঢাকার অবস্থান তৃতীয়।
শনিবার ২১ ডিসেম্বর সকালে আইকিউএয়ারে ঢাকার বায়ুমান রেকর্ড করা হয়েছে ২০৫। এছাড়া এই মান নিয়ে সারা বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরগুলোর মধ্যে তৃতীয় স্থানে আছে ঢাকা।
সকাল থেকে রাজধানীর আকাশ বেশ কুয়াশাচ্ছন্ন। একইসঙ্গে ঢাকার বাতাসও আজ ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’। বায়ুদূষণের তালিকায় এক ধাপ নিচে নেমে এলেও, কুয়াশার সঙ্গে বাতাসের এই দূষণ সুস্থ মানুষের জন্যও অনেক ক্ষতিকর।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান নির্ধারণ সংস্থা আইকিউএয়ার থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বায়ুদূষণের তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে ভারতের দিল্লি। কোনো শহরের বায়ুমান ৩০০ হলে, সেখানকার বাতাস দুর্যোগপূর্ণ হিসেবে ধরা হয়। আজ দিল্লির বায়ুমানও ৩০০ পেরিয়েছে। বায়ুদূষণের দিক থেকে বরাবরই শীর্ষ শহরের তালিকায় থাকা পাকিস্তানের লাহোর আজ দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
এছাড়া শীর্ষ পাঁচ শহরের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানের করাচি এবং নেপাল।
আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, স্কোর শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকলে বায়ুর মান ‘ভালো’ বলে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে মাঝারি বা ‘সহনীয়’ ধরা হয় বায়ুর মান।
১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে বাতাসের মান 'সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর', ১৫০ থেকে ২০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়।
২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে 'খুব অস্বাস্থ্যকর' বলা হয়, ৩০১+ একিউআই স্কোরকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের ৫টি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।
দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়। পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো- ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
এদিকে রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকার বায়ুমান বর্তমানে সময়ে প্রায়ই অস্বাস্থ্যকর থেকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পৌঁছাচ্ছে বলে জানিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে এ অবস্থায় সবাইকে বাইরে গেলে মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার অনুরোধ করা হয়েছে। ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিকদের এবং সাধারণ মানুষকে ৬টি পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
পদক্ষেপগুলো হচ্ছে— কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা; নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা; নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা; নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া; নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুইবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করা।