সীমান্তে দুর্নীতির মাধ্যমে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকছে। তারা বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে দেশে ঢুকে পড়ছে। এটা আটকানো খুব কঠিন - বলেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন
রবিবার ২২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ-বিআইআইএসএসে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে পুনরায় সংযোগ’ শীর্ষক এ সেমিনার আয়োজন করে বিআইআইএসএস ও ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপিং ইকোনমিকস (আইডিই-জেট্রো)।
মো. তৌহিদ হোসেন বলেন অর্থনীতিক ও ভূরাজনৈতিক কারণে বঙ্গোপসাগরের গুরুত্ব দিনদিন বাড়ছে। এ কারণেই আন্তর্জাতিকভাবে বঙ্গোপসাগর বড় বড় শক্তির নজরে পড়েছে। প্রতিবেশিসহ পরাশক্তির দ্বন্দ্ব সংঘাতের কেন্দ্রে পরিণত হতে দেবে না বাংলাদেশ।
রোহিঙ্গাদের অধিকারসহ নিরাপদ প্রত্যাবাসন করতে না পারলে এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে না। নিরাপদ ও সমৃদ্ধ বঙ্গোপসাগর এলাকা গড়ে তোলার জন্য স্থিতিশীলতা দরকার। এজন্য রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সব অংশীজনকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানাই।
তিনি আরও বলেন, জাপান এই অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে চায়। বিনয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে। এটা এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা রক্ষা সমৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা পালন করবে।
উপদেষ্টা বলেন, আমাদের নীতিগত অবস্থান ছিল আর কোনো রোহিঙ্গাকে ঢুকতে দেব না। তবে পরিস্থিতি কখনো কখনো এমন দাঁড়ায়, আমাদের কিছু আর করার থাকে না। সে রকম পরিস্থিতিতে আমরা ৬০ হাজার রোহিঙ্গাকে ঢুকতে দিয়েছি।
মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে যে ঢুকতে দিয়েছি, তা ও না। তারা বিভিন্ন পথে ঢুকেছে। আর একটি কথা আমাদের মনে রাখতে হবে, প্রচুর দুর্নীতি আছে সীমান্তে। এটা সত্য, অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। দুর্নীতির মাধ্যমে তারা ঢুকছে। নৌকা নিয়ে ঢুকছে। একটা সীমান্ত দিয়ে যে ঢুকছে, বিষয়টি এমনও না, বিভিন্ন জায়গা দিয়ে ঢুকছে। এটাকে আটকানো খুব কঠিন হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি না, আরও একটি ঢল আসবে। যদিও অনেকে আশঙ্কা করছেন। এই আশঙ্কা আমাদেরও আছে। তবে সেই ঢলকে আটকানোর ব্যবস্থা করতে হবে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সঙ্গে নিয়েই।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এখন বয়স্ক যেসব রোহিঙ্গা আছেন, তারা হয়তো পরিস্থিতি মেনে নেবেন। তবে আগামী ৫ বছর পর যেসব তরুণ রোহিঙ্গা, যাদের বয়স ২০ বছর হবে ডেস্পারেট হয়ে যাবে। তখন আমাদের সমস্যা বেশি হবে, প্রত্যেকেরই হবে। রোহিঙ্গারা এখন অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।