উন্নয়ন ও দুর্নীতি নিয়ে আমার বক্তব্য ভুলভাবে প্রচার করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
শনিবার ১৭ ফেব্রুয়ারী সকাল ১০টায় সিলেটের সাগরদীঘিরপাড় ওয়াকওয়ে পরিদর্শন যান তিনি। পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা জানান।
উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার ঢাকার এফডিসিতে এক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘দুর্নীতি বাদ দিয়ে উন্নয়নমূলক কাজ করা কঠিন’।
তিনি আরো বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, সাধারণত দুর্নীতি বলতে আমরা আর্থিক দুর্নীতিটাকেই বেশি বুঝে থাকি। কিন্তু নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করাও অনেক বড় দুর্নীতি। স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করতে গেলে স্মার্ট জনপ্রতিনিধি এবং স্মার্ট জনগণ দুটোই লাগবে। জনপ্রতিনিধি ও জনগণ তাদের নিজেদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলেই দুর্নীতিমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সব সেক্টরেই কমবেশি দুর্নীতি বিদ্যমান। দুর্নীতি বাদ দিয়ে উন্নয়নমূলক কাজ করা কঠিন। বড় ধরনের দুর্নীতি খুবই খারাপ। এই দুর্নীতির জন্য আমি নিজেও অনেক কাজ করতে পারি না। এসব দুর্নীতি কমানোর লক্ষ্যে বর্তমানে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। জনপ্রতিনিধিদের অনিয়মের অভিযোগ অনেকটাই কমে এসেছে।
ওই বক্তব্য ভুলভাবে প্রচার করা হয়েছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, যখন উন্নয়ন চলতে থাকে, তখন তার সঙ্গে দুর্নীতিও হতে পারে। কাজ না হলে দুর্নীতি কিভাবে হবে! এভাবেই উন্নয়নের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদকে শক্তিশালী করা হবে। তবে যখনই দুর্নীতি চিহ্নিত হবে, তখনই তা শক্ত হাতে প্রতিহত করা হবে।
সরকার পতনে বিএনপির চলমান কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি বলেন, জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য যেকোনো দলের কর্মসূচিকে স্বাগত। তবে ধংসাত্মক কার্যক্রম দমন করা হবে। কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দল যদি ধ্বংসাত্মক ও গণবিরোধী কোনো কার্যক্রম করে, তাহলে সরকার সংবিধান অনুযায়ী কঠোরভাবে তা দমন করবে।
সিলেটের উন্নয়নে সরকার সবসময় আন্তরিক উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী একজন সঠিক লোককে লন্ডন থেকে এনে দায়িত্ব দিয়েছেন। আমাদের দেশে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করার লোকের বড়ই অভাব, এক্ষেত্রে সিলেটের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী একজন দায়িত্বশীল মানুষ। একজন সঠিক ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রী খুঁজে বের করেছেন। এই সরকারের আমলেই আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর নেতৃত্বে সিলেটে ব্যপক উন্নয়ন করা হবে।
ওয়াকওয়ে পরিদর্শনকালে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য একে আব্দুল মোমেন, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইব্রাহিম, সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমানসহ সিসিকের কাউন্সিলর ও অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
একইদিনে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সিটি করপোরেশন কর্তৃক স্থাপিত অক্সিজেন প্ল্যান্টের উদ্বোধন করেন মন্ত্রী।
এছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজিরবাজার বৈঠাখাল, নবনির্মিত কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, সিসিক পরিচালিত কুমারপাড়াস্থ ওসমান মিয়া মার্চেন্ট মা ও শিশু হাসপাতালের উদ্বোধন, আরবান রেসিলিয়েন্সের আওতায় নির্মিত নগর ভবনের ষষ্ঠ তলায় ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার পরিদর্শন এবং লালমাটিয়া ডাম্পিং গ্রাউন্ডে সিসিকের এম.আর.এফ প্ল্যান্ট পরিদর্শন ও ফলক উন্মোচন করেন মন্ত্রী। পরে সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রীকে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়।