আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে ভার্চ্যুয়ালি প্রকল্প এলাকা পটুয়াখালী জেলার পায়রায় ১১ হাজার ৭২ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। যার মাঝে রয়েছে ক্যাপিটাল ড্রেজিংসহ আটটি জাহাজের উদ্বোধন, প্রথম টার্মিনাল ও ছয় লেনের সংযোগ সড়ক, বন্দরের ক্যাপিটাল ড্রেজিং এবং একটি সেতু নির্মাণ।
গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, রিজার্ভের টাকা উধাও হয়ে যায়নি, দেশের মানুষের উন্নয়নেই কাজে লাগানো হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের টাকা থেকে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য একটি ফান্ড করা হয়। এই ফান্ডের নাম বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড। সেখান থেকে স্বল্প সুদে ঋণ হিসেবে টাকা দেওয়া হয়েছে পায়রা বন্দরের উন্নয়নে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু তৈরি করেছি। বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড এটা দিয়ে পায়রা বন্দরের কাজটা আমরা শুরু করলাম। ভবিষ্যতে আমরা অবকাঠামো উন্নয়নে এই ফান্ড কাজে লাগাতে পারব।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, অনেকেই জানতে চায়, রিজার্ভের টাকা গেল কোথায়? তাদের বলতে চাই, এটা কেউ চিবিয়ে খায়নি। রিজার্ভের টাকা গেছে পায়রা বন্দরে, খাদ্য আমদানিতে। রিজার্ভের টাকা গেছে আমদানিতে, মানুষের কাজেই এটা লাগাচ্ছি।
তিনি বলেন, ‘পায়রা নদীতে ড্রেজিং হয়ে গেলে এই নৌপথটা একেবারে আমরা উত্তরবঙ্গ পর্যন্ত নিয়ে যাব। পাশাপাশি আসাম ও ভুটান পর্যন্ত নৌপথ চালু করতে পারব। আমাদের চট্টগ্রাম এবং মংলা বন্দর ভুটান, নেপাল এবং ইন্ডিয়াকে ব্যবহার করবার জন্য আমরা তাদেরকে সুযোগ দিয়েছি। পায়রা বন্দরটাও কিন্তু এক সময় অন্য ধরনের একটা গুরুত্ব বহন করবে।’
আজ যে আটটি জাহাজের উদ্বোধন করা হলো তার মধ্যে সাতটি আমাদের দেশে তৈরি বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি নৌপথকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেই। এটা সবচেয়ে কম খরচে করা যায়। শুধু সড়কে না, সব দিক থেকেই একটা যোগাযোগ করতে পারছি এই অঞ্চলের সঙ্গে। এই অঞ্চলে শিল্পকারখানা হচ্ছে, পর্যটনের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে, কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ছে। এখানে একটা জায়গা আছে স্বর্ণদ্বীপ, যা স্থানীয়ভাবে সোনার চর নামে পরিচিত। সেখানে সূ্র্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায় একই সঙ্গে। এখানে পর্যটনের সুযোগ আছে। ’
প্রধানমন্ত্রী জানান, ‘বন্দরের কার্যক্রম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক করিডোরে পায়রা সমুদ্র বন্দরের যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে দেশে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা, দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে এবং বহু লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশ হবে বলেও দাবি করেন শেখ হাসিনা। সেইসঙ্গে দেশের সবগুলো অঞ্চলের মানুষ সমান উন্নত জীবন পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।